বৃহস্পতিবার, ০৯ জুন, ২০১৬, ০৯:৪৩:৩১

আলহামদুলিল্লাহ, অন্যকে খাইয়ে রোজা রাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছোট্ট সুমন

আলহামদুলিল্লাহ, অন্যকে খাইয়ে রোজা রাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছোট্ট সুমন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বয়স মাত্র তার ১১ বছর।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির একটি চা দোকানে কাজ করে সে।  সারাদিন শত শত মানুষকে খাওয়ালেও মাহে রমজানের রোজা রাখছে শিশু সুমন।

ভাগ্যের নির্মমতায় শিক্ষা অর্জন করতে পারেনি সুমন।  এখন চায়ের কাপ ধোয়ার কাজে ব্যস্ত ছোট্ট শিশুটি।  

সুমন জানায়, আরে ভাই আমি তো সব সময়ই রোজা রাখি।  কোনো দিন খাইয়া আবার কোনোদিন না খাইয়া।  পেটের জ্বালা কী বুঝি না, ভাই।

সুমন আজকের রোজাটি সেহরি না খেয়েই রেখেছে। কারণ তার খাবার জুটেনি।  কিন্তু ইফতারটা ভালো করে করার ইচ্ছা তার।  

বেশ কয়েকটি দোকানের ধোয়ামোছার কাজ করে সুমন, তাতে ভালো টাকাই পায় সে।

সুমন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিত্যক্ত ভ্যানগাড়ির নিচে পলিথিনে মোড়ানো তার মায়ের ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরে থাকে।  বাবা ভৈরবে থাকেন।  

তাদের খোঁজ নিতে আসেন না।  মা-ই তাদের সংসার দেখে।  কিন্তু মা যে ভীষণ অসুস্থ।  তাই কখনো ফুল বিক্রি করে বা চায়ের দোকানে কাজ করে দিন কাটে তার।  

এতদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কাঁঠাল চাপা ফুল বিক্রি করে আসছিল সুমন।  এখন ফুল নেই।  সেজন্য দোকোন দোকানে কাজ করে সে।

গত কয়েকদিনে টিএসসির সামনে থাকা বেশ কয়েকটি দোকানে ধোয়ামোছার কাজে দিন কাটে সুমনের।  

দিন শেষে পায় ১০টাকা করে।  দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ৫টি দোকানে ধোয়ামোছার কাজ করে সে। এতে পায় সে ৫০ টাকা।  সেই টাকা দিয়ে মাকে নিয়ে মজা করে ইফতার করবে।

ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ে আসা অনেক শিক্ষার্থী সুমনকে বিভিন্ন সময় কাপড়-চোপড় দেয়।  অবশ্য সেটা তার পরা হয় না।  গ্রামে থাকা আরো এক ছোট বোন এবং দুই ভাইয়ের জন্য কাপড় পাঠিয়ে দেয় সে।

সুমন জানায়, মা শুধু কাশে।   চিকন হয়ে গেছে। অনেক বছর ধরে বাবা আয়ে না।  আমি যদি বেশি টাকা পাইতাম, মাকে হাসপাতালে নিতাম।  মা'র জন্য মায়া হয়।  

আমি ভিক্ষা করি না।  কারো থেকে টাকাও নেই না। কাজ কইরা যা পাই মাকে নিয়ে খাই।  
৯ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে