এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : নদ আর নদী। সাধারণত জলধার জেন্ডারের ক্ষেত্রে এভাবেই আমরা বিভাজন তরে থাকি। যেমন ব্রহ্মপুত্র নদ হলেও ধলেশ্বরী কিন্তু নদী। বিদেশের স্রোতস্বীনিদেরও নারী-পুরুষে ভাগ করেই দেখে। যেমন— নীল নদ, টেমস নদী। কীসের ভিত্তিতে এই বিভাজন, তা অবশ্য বেশিরভাগ মানুষই জানেন না।
এই নারী-পুরুষ বিভাজনের কারণ খুঁজতে গেলে অনেক আগে ঢু মেরে আসতে হবে। প্রত্যেকটি জলধারারই ‘জন্মবৃত্তান্ত’ রয়েছে। এই বৃত্তান্ত অনুযায়ী, তারা কখনও নারী, কখনও পুরুষ। যেমন গঙ্গা বা নর্মদা নারী। আবার সিন্ধু বা ব্রহ্মপুত্র পুরুষ। এর সঙ্গে সব সময়েই জড়িয়ে রয়েছে ধর্মীয় অনুষঙ্গ। জেন্ডার অনুযায়ী জলধারাদের উপরে বিভিন্ন মহিমাও আরোপিত হয়।
কিন্তু এই ব্যাখ্যাকে উত্তীর্ণ করে যদি দেখতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে গণমানসকে। লক্ষ্যণীয় এই যে, ‘নদ’ হিসেবে পরিচিত জলস্রোতগুলি সর্বদাই যে খুব বড়সড় কিছু তা নয়। আবার ‘নদী’ যে ক্ষীণতোয়া কপোতাক্ষী সর্বদা, এমনও নয়।
দামোদর বা দ্বারকা গঙ্গা বা তোর্সার কাছে নেহাতই শীর্ণ। সম্ভবত অন্য এক কারণ এই বিভাজনের পিছনে কাজ করেছে। ‘নদ’ হিসেবে পরিচিত জলধারাগুলি মাঝে মাঝেই রুদ্ররূপ ধারণ করে। অন্য সময়ে তারা উদাসীন। ঠিক যেন সংসারী পুরুষ।
তাই বলে ‘নদী’গুলিতে বন্যা হয় না, তা নয়। তাদের ধ্বংসাত্মক চরিত্রকে অতিক্রম করে রয়েছে তাদের এক ‘মাতৃভাব’। গঙ্গা, নর্মদা বা রেবা, গোদাবরী পালনকর্ত্রী, দাত্রী। আর দামোদর বা সিন্ধু রুক্ষ, রুদ্র আর অনেকটাই আনপ্রেডিক্টেবল। সে কারণেই সম্ভবত এই বিভাজন, এমনটাই মত সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্বের গবেষকদের।
১২ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন