বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:০৫:৫৫

প্রতিভাবান ৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী

প্রতিভাবান ৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও প্রতিভা থেমে থাকেনি ওদের। দমিয়ে রাখতে পারেনি তাদের কেউ। আপন মনোবলে এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে। পৃথিবীর এমনই বিস্ময়কর ৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর কথাই বলা হলো।

ওয়ার্ল্ড ক্লাস রানার মারলা রুনিয়ান : যখন তার বয়স মাত্র ৯ বছর, তখন অজ্ঞাতপরিচয় রোগের কারণে তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়; কিন্তু এ অক্ষমতা তার মনোবল কেড়ে নিতে পারেনি।

১৯৮৭ সালে তিনি সান দিয়াগো ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন এবং ধীরে ধীরে নিজের প্রতিভা বিশ্বের সামনে প্রকাশ পেতে থাকে।

১৯৯২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে মারলা রুনিয়ান ৪টি স্বর্ণমুদ্রা এবং ১৯৯৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে শর্ট পুটে রৌপ্য এবং দৌড়, ঘোড়া চালানো, সাঁতার, বর্শা নিক্ষেপ, শুটিং প্রতিযোগিতায় এক সঙ্গে অংশগ্রহণে একটি করে স্বর্ণমুদা অর্জন করেন।

১৯৯৯ ও ২০০০ সালে যথাক্রমে আমেরিকান গেমস ও সিডনি অলিম্পিকের পর তাকে ওয়ার্ল্ড ক্লাস রানার আখ্যায়িত করা হয়। যেখানে তিনি ১৫০০ ও ২০০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় অষ্টম হয়েছিলেন। এরপর ২০০১ সালের ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়শিপে  তিনি ৫ হাজার মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।

মারলা রুনিয়ান তার আত্মজীবনী নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেছেন। বইটির নাম দিয়েছেন নো ফিনিশ লাইন মাই লাইফ এজ আই সি ইট। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তার কোচমেট লনেরগানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

সার্ফার ডিরিক রাবিলো : জন্মগতভাবেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ডিরিক রাবিলো। অন্ধত্বকে জয় করে ২০ বছর বয়সী এ ব্রাজিলিয়ান মাত্র তিন বছর বয়সে সার্ফিং আয়ত্ত করেছিলেন। তিনি বলেন, স্রষ্টা সঙ্গে থাকলে সবকিছুই সম্ভব।

চিত্রশিল্পী জন ব্রামব্লিট :  ত্রিশ বছর বয়সে ২০০১ সালে এপিলিপসি রোগে আক্রান্ত হয়ে তার দৃষ্টিশক্তি হারায়। প্রথমে তিনি খুবই আশাহত হন এবং ভেঙে পড়েন; কিন্তু পরে তিনি শুধু স্পর্শের সাহায্যে তুলির রঙ বুঝে নিতে শেখেন। তার অঙ্কিত চিত্র বর্তমানে ২০টি দেশেরও বেশি জায়গায় প্রদর্শিত হচ্ছে।

২০০৮ সালে জন ব্রামব্লিটের চিত্রকর্ম মোস্ট ইনস্পাইরেশনাল ভিডিও ব্যাপক আলোড়ন জাগিয়েছে। এই অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন তিন তিনটি প্রেসিডেন্সিয়াল সার্ভিস অ্যাওয়ার্ডস।
 

মার্ক এন্থোনি রিকোবোনো  : ২০১১ সালের ২৯ জানুয়ারি। মার্ক এন্থোনি রিকোবোনো গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন দেটোনা ইন্টারন্যাশনাল স্পিডওয়ে রাস্তায়। দূর থেকে বুঝা যাচ্ছিল না একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন।

২টি প্রযুক্তির সহয়তায় তিনি এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন। একটি হলো ড্রাইভ গ্রিপ যা দুইটি গ্লোভসের সমন্বয়ে গঠিত। এটি চালককে কম্পনের মাধ্যমে সংকেত দেয় কতটুকু এবং কোন দিকে হুইল ঘুরাতে হবে। আর অন্যটি হলো স্পিডস্ট্রিপ যা ড্রাইভারের পায়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে আর সংকেত প্রেরণ করে কতটুকু গতি দিতে হবে।

রন্ধনবিদ ক্রিস্টাইন হা : ২০১২ সালের মাস্টারশেপ বিজয়ী হন ক্রিস্টাইন হা। তিনি জন্মগত রোগের কারণে ধীরে ধীরে তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ২০০৭ সালে একেবারে দৃষ্টিহীন হয়ে যান। তিনি বলেন, আমার আছে অদম্য শক্তি ও রন্ধনশৈলী। সৃষ্টিকর্তা সহায় থাকলে আমি সব জয় করতে পারবো।

ফটোগ্রাফার পিটি ইকার্ট : পিটি ইকার্ট অসুস্থতার কারণে তার দৃষ্টিশক্তি হারান। যদিও তিনি স্কাল্পচার এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন কিন্তু পরে ফটোগ্রাফিতে মন দেন। তার ফটো তোলার ধরন হলো : প্রথমে তিনি জেনে নেন তিনি কিসের ছবি তুলবেন। তারপর মনে মনে কল্পনায় দৃশ্যটি এঁকে নিয়ে পারিপার্শ্বিক শব্দের পরিপ্রেক্ষিতে ছবি তোলেন।

তিনি বলেন, আমি সব দৃশ্য কল্পনা করতে পারি। কিন্তু চোখে দেখতে পাই না।
২৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে