এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দৈনন্দিন জীবন পরিচালিত হয় সময়ের হিসাব কষে। প্রতিটি কাজ একটি নিয়মের মধ্যে রাখতে হয়। আর সেই সময় বলে দেয়ার মহা দায়িত্বটা ঘড়ি নামের যন্ত্রটির। সময়ের হিসাব রাখতে আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছি বর্ষপঞ্জি, ঘড়ি। ঘরের দেয়াল থেকে শুরু করে পকেটের মোবাইল-ঘড়ি আছে সবখানে।
সময়ের হিসাব রাখাটা আমাদের কাছে চোখের পলক ফেলার মতো সহজ একটা কাজ হয়ে গেছে।
ঘড়ির ইতিহাসটা মানবসভ্যতার ইতিহাসের মতো এতোটা প্রাচীন না হলেও একেবারে নতুন নয়। মানুষ তার জীবনের সময়গুলোর একটা সঠিক হিসাব রাখার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে আনুমানিক পাঁচ থেকে ছয় হাজার বছর আগে। এর আগ পর্যন্ত সময়ের হিসাব রাখতে মানুষ কেবল দিন ও রাত- এ শব্দ দুটোই ব্যবহার করতো।
প্রকৃতির সাহায্যেই মানুষ প্রথমে সময়ের হিসাব রাখতেন। আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে, মূলত সূর্যের অবস্থানকে কাজে লাগানো হতো।
৩৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিসরীয়রা লম্বা, চারকোণা এক ধরনের পিলার তৈরি করে। দিনের অন্য সময় থেকে দুপুরকে আলাদা করতে প্রথমদিকে ছায়ার সাহায্যে নিতেন তারা।
প্রায় ২০০০ বছর পর মিসরীয়রা প্রথম একটি যন্ত্র তৈরি করে, যাকে বর্তমান ঘড়ির সঙ্গে তুলনা করা চলে। সূর্য ও ছায়াকে কাজে লাগিয়ে যে যন্ত্রটি দিয়ে সময় নির্ধারণ করা হতো তার নাম দিয়েছিলেন সূর্যঘড়ি। এ ঘড়িগুলোকে বলা যেতে পারে এক কাঁটা বিশিষ্ট ঘড়ি।
এ ঘড়িতে ব্যবহৃত হতো একটি চাকতি। চাকতিটি ১০টি অংশে বিভক্ত ছিল। চাকতিটির মধ্যে লম্বা রড জাতীয় কোনো বস্তু রাখা হতো। এরপর ওই রডের ছায়া সূর্যের অবস্থান অনুযায়ী চাকতির ভিন্ন ১০টি অংশে পড়ে দিনের পৃথক ১০টি সময় নির্দেশ করতো। মাঝদুপুরে চাকতিটিকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেয়া হতো।
মিসরীয়রা এভাবে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সূর্যঘড়ির সাহায্যে দিনের সময়ের হিসাব রাখতো। তবে বেশ কিছু সমস্যা ছিল প্রাচীন এ সূর্যঘড়িগুলোর। যেমন মেঘলা দিনে এ ঘড়ি সময় বলতে পারতো না, রাতে সময়ের কোনো হিসাব রাখা যেত না, বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্যের অবস্থানে তারতম্য হওয়ায় প্রায়ই ভুল ফল দেখা যেত।
তারপরও গ্রিস, ইতালি এবং এশিয়া মাইনরে ৩০টিরও বেশি দেশে সূর্যঘড়ির ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তা ৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে।
২৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস