এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : শিক্ষার কোনো বয়স নেই কথাটি শুনে আসলেও এর বাস্তব উদাহরণ ইনিই, যিনি ৬৮ বছর বয়সে দশম শ্রেণির ছাত্র।
চমকে গেলেন? ঘটনা কিন্তু একেবারে সত্যি। ছোট ছোট বালক-বালিকাদের সঙ্গে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করেন ইনি। অবশ্য এমন ইচ্ছাশক্তির ব্যক্তি ক’জন আছেন?
কিন্তু ৬৮ বছরের এক প্রবীণ ছোট ছোট বালক -বালিকাদের সঙ্গে নিয়মিত স্কুল করেন। খেলাধুলাসহ অংশ নেন অন্যান্য কর্মকাণ্ডেও অংশ নেন তিনি।
তবে বয়স্কদের শিক্ষার জন্য পৃথিবীর অনেক দেশেই নানা কার্যক্রম আছে। সেসব কার্যক্রমে অংশ নেন শুধু বয়স্করাই।
ছোট ছোট বালক-বালিকাদের সঙ্গে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে নিশ্চয় কোনো বয়োঃজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির সন্ধান খুব একটা পাবেন না। এবার সেই অনিচ্ছার জাল ছিন্ন করেন ৬৮ বছরের এক প্রবীণ।
নেপালের ওই স্কুল শিক্ষার্থীর নাম দূর্গ কামি। জীবনের শেষদিকে এসে নিজের অপূর্ণ শিক্ষাটাকে পূর্ণতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তার জীবনের লক্ষ্য, একজন শিক্ষক হবেন তিনি। এজন্য অবশ্য শ্রমটাও তাকে কম দিতে হয় না। নিয়মিত ঘণ্টাব্যাপী পায়ে হেঁটে স্কুলে যাতায়াত করতে হয় তাকে।
নেপালি শিক্ষাব্যবস্থায় দশম শ্রেণির ছাত্র তিনি। ১৪ থেকে ১৫ বছরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়মিতই ক্লাসে অংশ নেন দূর্গ কমি। ছয় সন্তানের জনক দূর্গের বর্তমানে নাতি-নাতনি আটজন।
তার নিকটাত্মীয় এক শিক্ষক বলেন, বাবার বয়সী একজন মানুষকে শিক্ষা দেয়ার অভিজ্ঞতা আমার জীবনে এটাই প্রথম।
ক্লাসে তার সহপাঠিরা তাকে নেপালি ভাষায় ডাকে ‘বা’ বলে। এর অর্থ বাবা। এ বয়সে স্কুলে যাওয়া সম্পর্কে দূর্গ বলেন, নিজের দুঃখ ভুলে থাকতেই স্কুলে যাই।
স্ত্রী মারা যাওয়ার পর জীবনের একাকিত্ব থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
আর্থিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছল নন দূর্গ।
রাতের বেলা টর্চ লাইট জ্বালিয়ে পড়াশুনা করতে হয় তাকে। কখনো কখনো নিজের খাবার জোগাড় করতে পারেন না তিনি।
তার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী রয়টার্সের আলোকচিত্রী নবিশ চিত্রকর বলেছেন, তিনি খুবই দৃঢ় এবং অনুপ্রেরণাদানকারী একজন মানুষ। আমি তার দুঃখ এবং একাকিত্ব বুঝতে পেরেছিলাম।
সব বাধা এড়িয়ে মৃত্যু পর্যন্ত নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দূর্গ কমির। তিনি আশা করেন, তার এ প্রচেষ্টা অন্যদেরও উৎসাহিত করবে।
এমটিনিউজ২৪/এমআর/এম,জে