এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দশ বিশটি নয়, জামাই রাজার খপ্পরে পড়ে ৫৫ রানীর সর্বনাশ! হ্যাঁ, এমন ঘটনাই ঘটেছে। তবে মিথ্যার আশ্রয়ে বোকা হয়েছে ৫৫ জন মেয়ে।
মৃত্যুর সময় অবশ্য ৫৫ জন মহিলার কারো হাতের জলটুকুও পাননি তিনি। পুলিশের খাতায় তিনি ‘জামাই রাজা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
কিন্তু জীবনে বিয়েটা আর করা হয়নি তার। ৫৪ বছর বয়সে সিন্ধারির নিম্বালকোটে মারা যান তিনি। চিতায় দাহ করানোর মতো লোকও ছিল না তার। প্রতিবেশীরা তাকে ঘৃণা করতেন।
অবশেষে দায় নিতে হয় এলাকার পুলিশকর্মীদেরই। নাকে দড়ি দিয়ে এতদিন যাদের ঘুরিয়েছিলেন, তাদের হাতেই হলো শেষকৃত্য। ইন্দোইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানা গছে।
‘জামাই রাজা’ নামের রহস্য!
এক পুলিশকর্মী জানালেন, বার্মারের ১৮টি পুলিশ স্টেশনের পুলিশ একসঙ্গে তাকে খুঁজে বেরিয়েছে। ১০ বছর ধরে পুলিশকে নাকের ডগায় ঘুরিয়ে একের পর এক কাজ সেরেছে।
তার আসল নাম জিয়ারাম জ়াট। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট ৫৫ জন যুবতির কাছে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে রাত কাটিয়েছে জিয়ারাম। শুধু তাই নয়, সকালের আলো ফোটার আগেই যুবতীর গয়না নিয়ে পালাতেন তিনি।
এ কথা নিজেই স্বীকার করেছেন জিয়ারাম জ়াট। পরে বুঝতে পারলেও সমাজে মুখ দেখানোর ভয়ে আর পুলিশে অভিযোগ করতেন না।
তাকে ধরা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়লেও ২০০৪-এ ধরা পড়ে জামাই রাজা। ৯ বছরের কারাদণ্ড হয় তার।
২০১৩ সালে মুক্তি পেয়ে কিছুদিন ভালোই ছিলেন তিনি। কিন্তু পুরনো নেশা কি আর ভোলা যায়। ৫৬ নম্বর নারীর কাছে গিয়ে একই ফাঁদ পাতেন তিনি। কিন্তু এবার পুলিশ আগাম খবর পেয়ে যায়। ফের গ্রেপ্তার করা হয় জামাই রাজাকে।
উত্তর ভারতের এক প্রাচীন সংস্কৃতি গউনা। এ সংস্কৃতি এক প্রকার বাল্যবিবাহের সামিল। খুব ছোটোবেলায় বিয়ে দেয়া হত ছেলেমেয়েকে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে ফের তারা একসঙ্গে থাকার সামাজিক স্বীকৃতি পেত। একেই বলা হয় গউনা।
জিয়ারাম এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছিলেন। তিনি নিম্নমধ্যবিত্ত বা অভাবী পরিবারে তার এই চাল খাটাত। মেয়েদের তিনি পরিচয় দিতেন, তিনি নাকি ওই যুবতীর ছোটোবেলায় বিয়ে হওয়া স্বামী।
অধিকাংশ যুবতী এ রীতি মেনে বিয়ে করেছিল, কিন্তু ছোটোবেলার তার স্বামীর মুখ চিনে রাখা সম্ভব নয়। তাই জিয়ারামকে তাদের বিশ্বাস করা ছাড়া উপায় ছিল না।
স্বামী পরিচয়ে রাত কাটিয়ে গয়নাগাটি নিয়ে উধাও হয়ে যেতেন জিয়ারাম। রাত পোহালে বাড়ির লোকজন বুঝতে পারতেন, কত বড় প্রতারকের পাল্লায় পড়েছিলেন তারা।
১৫ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম