বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:০০:০৭

কূপ নারী

কূপ নারী

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক :  আফ্রিকার আর দশটা দেশের মতো নাইজেরিয়ার সমাজটাও বড় বেশি পুরুষতান্ত্রিক। তবে সেই পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়াজাল ভেদ করে অন্যরকম এক পেশায় নিয়োজিত নাইজেরিয়ার এক নারী। আর সেই পেশার কারণেই তার নাম কূপ নারী।

মেগাসিটি লাগোস এবং এর আশপাশের এলাকায় বিশুদ্ধ পানির স্বল্পতা যেমন রয়েছে তেমনি পানির সরবরাহও অনেক কম। লাগোসের রাজ্য পানি করপোরেশন জানিয়েছে, শহরের ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের প্রতিদিন ৫৪ কোটি গ্যালন পানি প্রয়োজন।

যেখানে তারা পাচ্ছে মাত্র ২১ কোটি গ্যালন পানি। ২০২০ সালে এই পানির চাহিদা দাঁড়াবে দিনে ৭৪ কোটি ৫০ লাখ গ্যালন। তখন ওই শহরের জনসংখ্যা হবে ২ কোটি ৯০ লাখ।

এ কারণে ট্যাংকার এবং ব্যাক্তিগত কূপের চাহিদা বাড়ছে। সেইসাথে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে বিশুদ্ধ পানির চাহিদাও বাড়ছে।

পানির এই স্বল্পতা রাবিয়ু’র মতো কূপ খননকারীদের ব্যবসার সুযোগ বাড়িয়েছে। অথচ রাবিয়ু এই কাজটা শুরু করেন ১৯৯৭ সালে।

এ কাজটা শিখেছিলেন তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছ থেকে। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এখন তিনি পরিচিত মামা কাঙ্গা বা কূপ নারী নামে।

৪৬ বছর বয়সী ওলোলাদে রাবিয়ু ছয় সন্তানের জননী। আফ্রিকার লাল মাটি খুঁড়ে বিশুদ্ধ পানি বের করে ইতিহাসে স্থান করে নেন তিনি।

সংবাদ সংস্থা এএফপিকে রাবিয়ু জানান, ‘কূপ খোঁড়ার এই পেশায় একমাত্র নারী হওয়ায় তিনি ভীষণ খুশি। আমি এই কাজটা করতে ভালোবাসি এবং উপভোগ করি। এমন কোনো কূপ নেই যেখানে আমি প্রবেশ করতে পারি না।’

তিনি কাজটাকে এভাবে ব্যাখ্যা করেন, ‘শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না কিন্তু আমি আমার ভয় কাটিয়ে উঠেছি এবং পেশা নির্বাচনে আমার কোনো ভুল হয়নি।

আমার স্বামী কুয়ো খননের প্রাথমিক বিষয়, যেমন কোথায় পানির স্তর কেমন, পানির গভীরতা, কি কি সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে, কি কি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে এ বিষয়ে ভালোভাবে বোঝান। এরপর বিষয়টা আমার কাছে সহজ হয়ে যায়।

রাবিয়ুর প্রতিবেশী এবং গ্রাহকরা তার যোগ্যতার প্রশংসা করেছেন। প্রশংসাদেরই একজন বলেন, ‘প্রায় সাত বছর আগে তিনি আমার কুয়াটি খনন করেছেন এবং এত ভালোভাবে করেছেন যে, এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। আমার মনে হয়, অন্য অনেক পুরুষের চেয়ে তিনি বেশ দক্ষতার সাথে এটা করেন।

রাবিয়ুর এক সন্তান স্পেনে আছেন এবং সেখানে তিনি এ ব্যবসার সাথে জড়িত। রাবিয়ু বলেন, কাজটা বেশ বিপজ্জনক এবং এতে মেরুদ- ভাঙার একটা ভয়ও থাকে। তবে সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রাখা উচিত।

রাবিয়ু এ পেশার পাশাপাশি কূপ খননে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন। তার কাছে প্রশিক্ষণ নেয়া ইউসুফ মাইনাসারা বললেন, ‘মামা কাঙ্গা আমাদের রানী, আমাদের হিরো এবং আমাদের মা। আমরা আসলেই তার জন্য গর্বিত।
২৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস
 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে