শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬, ০৫:৩৬:১৭

স্বপ্নপূরণের আশায় স্কুলে ভর্তি হলেন ৬৮ বছরের বৃদ্ধ

স্বপ্নপূরণের আশায় স্কুলে ভর্তি হলেন ৬৮ বছরের বৃদ্ধ

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভোরের আকাশে তখনও সূর্য ভাল করে উঁকি দেয়নি৷ তার আগেই দুর্গা কামির মুখ ধোয়া, ইউনিফর্ম পরা হয়ে যায়৷ স্কুলে যেতে হলে অন্তত এক ঘণ্টা হাতে সময় নিয়ে বেরোতে হবে৷ নেপালের আর পাঁচটা দশম শ্রেণির ছাত্রের মতোই তাকেও যে পাহাড়ি পথ ধরে হাঁটা লাগাতে হবে৷ পার্থক্য শুধু এটুকুই, তার বয়স ৬৮ বছর৷ নেপালের ‘জ্যেষ্ঠতম’ শিক্ষার্থী৷

ছয় সন্তানের পিতা, আট নাতি-নাতনির দাদু সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ছোটবেলায় গরিবির জন্য তাকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ বালক দুর্গা কামির স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে শিক্ষক হবেন, কিন্তু দারিদ্র তাকে সেই সুযোগ দেয়নি৷ এখন বয়স হয়েছে৷ সর্বক্ষণের সঙ্গী স্ত্রী মারা গিয়েছেন৷ খাঁ খাঁ বাড়িটা যেন তাকে গ্রাস করতে আসে৷ তাই একাকীত্ব ভুলতে তিনি স্কুলে ফিরে যান৷ “দুঃখ ভুলতে আমি স্কুলে যাই”, বলছেন দুর্গা কামি৷

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ১৫৫ মাইল পশ্চিমে স্যাংগজা জেলায় একফালি পাহাড়ের উপর ছবির মতো বাড়িতে তাকে একা ফেলে রেখে গিয়েছেন ছেলেমেয়েরা৷ কামি প্রথমে একটি প্রাথমিক স্কুলে অক্ষর পরিচয়ের পথ নেন৷ সেখান থেকে স্কলারশিপ পেয়ে শ্রী কালভৈরব উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ৷ স্কুল থেকেই তাকে দেওয়া হয় ইউনিফর্ম- সাদা জামা, খাকি প্যান্ট ও একটি টাই৷ যে বয়সে একজন মানুষের হাতে লাঠি থাকার কথা, সেই বয়সে দুর্গা কামি ১৫-১৬ বছরের ছেলেদের সঙ্গে স্কুলে চুটিয়ে ভলিবল খেলেন৷ ক্লাসের বাকি ছেলেরা তাকে ডাকে ‘বা’ বলে৷ নেপালি ভাষায় যার অর্থ ‘বাবা’৷

“ক্লাসের ছেলেমেয়েরা যেন আমার মতো সাদা দাড়িওয়ালা বৃদ্ধকে পড়াশোনা করতে দেখে অনুপ্রাণিত হয়৷ পড়াশোনার গুরুত্বটা বুঝতে পারে”, বলছেন আমৃত্যু পড়াশোনা করে যেতে চাওয়া দুর্গা কামি৷

১৭ জুন ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে