অবাক কাণ্ড, ভাইয়ের কাঁধে চড়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তাক লাগালেন প্রতিবন্ধী দাদা!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মনের ইচ্ছা থাকলে যে সাত সমুদ্র তের নদী পার হওয়া যায় তার দৃষ্টান্ত ইনি।  বেড়ে ওঠার আগেই পোলিও আক্রান্ত।  

গরিব পরিবারে বেড়ে ওঠা ছোট থেকেই বছর উনিশের কৃষাণ।  তবে শারীরিক বাধা ও অভাব আটকাতে পারেনি কৃষাণকে।  

আইআইটির ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকায় ৩৮ নম্বর স্থান পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বিহারের এ যুবক।  এতে অবাক বনে যান সবাই।  তবে কম যায় না তার ছোট ভাই বসন্তও।  অভাবের মধ্যে জয়েন্ট প্রবেশিকায় ৩৬৭৫ স্থান অধিকার করেছেন বসন্ত।

মাত্র ৬ মাস বছরে পোলিও আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে কৃষাণ।  সমস্তিপুরের পারোরিয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষাণের বাবা মদন পণ্ডিতের আয় বলতে বিঘা পাঁচেক জমিতে চাষাবাদ।  

তবে ছোট ভাই বসন্ত অবশ্য দাদাকে কাঁধে করে স্কুলে নিয়ে যেতেন।  এরপর থেকেই ভাই বসন্তই হয়ে ওঠে কৃষাণের অবলম্বন।

বছর তিনেক আগে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকার জন্য তৈরি হতে কোটাতে আসেন কৃষাণ ও বসন্ত। কোচিংয়ে ভর্তি হন।  

এখানেও বসন্তের কাঁধে চেপে কোচিংয়ে যেতেন কৃষাণ।  কোচিংয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য গ্রাম ছাড়ার সময় সবাই আশঙ্কা করেছিল যে, শারীরিক বাধা কাটিয়ে তারা এখানে তিন বছর ধরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে না।

কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল দুই ভাই।  তার জীবনে ভাইয়ের অবদানের কথা বলতে গিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন কৃষাণ।

তিনি জানিয়েছেন, এতদিন একসঙ্গে থাকতাম।  এবার দু’জনকে আলাদা কলেজে ভর্তি হতে হবে। বসন্ত আমার জন্য সবকিছু।  হোস্টেল থেকে ক্লাস সবত্রই কাঁধে করে নিয়ে গেছে আমাকে।  আমার খাবারও দিয়েছে বসন্ত।

দাদার সঙ্গে আর থাকতে পারবে না বসন্ত।  জানতে পেরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি।  জানিয়েছেন, দাদাকে ছাড়া থাকাটা খুবই কষ্টের।

সাফল্যে খুশি থাকলেও বিচ্ছেদের যন্ত্রণা রয়ে গেল। আবেগপ্রবণ হয়ে স্কুলজীবনের স্মৃতি রোমন্থনও করেন বসন্ত।

আইআইটিতে প্রথমবার ফেল করায় তাদের বাবা বাড়ি ফিরে আসতে বলে বসন্ত ও কৃষাণকে।  জেদ বাড়ে দুই ভাইয়েরই।  অর্থের কষ্ট ঘোঁচাতে পাশে দাঁড়ায় তাদের অন্য ২ ভাই, যারা গ্যারাজে কাজ করেন।

বড়ভাই কৃষাণ জানিয়েছেন, তিনি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চান।  ছোট ভাই বসন্ত আবার ইঞ্জিনিয়ারিং করার পর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসতে চান।
১৮ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম