সোমবার, ২০ জুন, ২০১৬, ০৭:৩৪:৫২

ভুতের ভয়ে ৪২ বছর ধরে ফাঁকা এই রেলস্টেশন!

ভুতের ভয়ে ৪২ বছর ধরে ফাঁকা এই রেলস্টেশন!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় অযোধ্যা পাহাড়ের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে স্টেশনটি। স্বাভাবিক ভাবেই অপূর্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে এই স্টেশন মন ভরিয়ে দেওয়ার মতো। কিন্তু, এই স্টেশন মনে শান্তি নয়, নিয়ে আসে ভয়! ভূতের ভয়! যে কারণে পুরুলিয়া জেলার কোটশিলার বেগুনকোদর স্টেশন ফাঁকা পড়ে ছিল একটানা ৪২ বছর ধরে।

যদিও একটা সময়ে বেগুনকোদরের এমন অবস্থা ছিল না। বেশ বড়সড় স্টেশন হিসেবে পুরুলিয়ায় যথেষ্ট নাম-ডাক ছিল বেগুনকোদরের। এখানে থামত প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ছিল স্টেশন-লাগোয়া কর্মচারীদের কোয়ার্টার। ছিল বাজার-হাটও! একদিন এই ছবিটা আমূল বদলে যায়। শোনা যায়, খুন হন স্টেশনমাস্টার এবং তার স্ত্রী। পরে তাদের দেহ উদ্ধার হয় স্টেশনের পাশের বড় এক কুয়ো থেকে। কেন খুন করা হয়েছিল তাদের, কে বা কারা ছিল খুনের নেপথ্যে- সে সব আজ আর জানা যায় না।

সেই শুরু! তার পর থেকেই ধীরে ধীরে ভৌতিক উপদ্রব গ্রাস করে বেগুনকোদরকে। রাত নামলে হঠাৎ হঠাৎ দেখা যেতে থাকে অদ্ভুত আলো। যত রাত বাড়ে, বাতাসে ভেসে আসে অদ্ভুত গন্ধ। শোনা যায় অশরীরী কণ্ঠস্বর। তবে শুধুই রাতের অন্ধকারে নয়! দিনের আলোতেও বেগুনকোদর মনে ত্রাস সঞ্চার করতে থাকে লোকজনের! দিনের বেলাতেও না কি অনেকেই কানের কাছে মানুষের গলা শুনে চমকে উঠেছেন। দেখেছেন চার পাশে তাকিয়ে, কিন্তু কাউকে দেখা যায়নি। অনেক সময়ে আবার লোকজনের গা ঘেঁষে চলে গিয়েছে অশরীরী কেউ! ধাক্কা খেয়ে সচেতন হয়েছেন সবাই, কিন্তু কারও দেখা মেলেনি!

তার পর থেকেই ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত এক স্টেশনে পরিণত হয় জমজমাট বেগুনকোদর। পালিয়ে গেলেন রেলকর্মীরা। বন্ধ হয়ে গেল স্টেশনে ট্রেন থামা। পোড়ো বাড়ির চেহারা নিল বেগুনকোদর। ১৯৬৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এমনই দশা চলে। তার পর, ২০০৯ সালে ফের শুরু হয় বেগুনকোদরের সেকেন্ড ইনিংস। পুরনো স্টেশন-বাড়িটাকেই রং করে খুলে দেওয়া হয়। শুধু প্যাসেঞ্জার হল্ট হিসেবে!

তবে, এই সময়সীমায় বেগুনকোদর স্টেশন চালু করার কথা যে একেবারেই ওঠেনি, এমন কিন্তু নয়! বামফ্রন্টের সাবেক সাংসদ বাসুদেব আচার্য এই রেল স্টেশন চালু করার চেষ্টা করেছিলেন। তার যুক্তি ছিল, ভূতের ভয় বাজে কথা৷ গ্রাম থেকে অনেক দূরের ওই স্টেশনে একটাই ট্রেন চলত৷ সে জন্য কেউ ওখানে কাজ করতে চাইত না৷ তাই এই ভৌতিক উপদ্রবের রটনা!

অবশেষে ২০০৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হয় স্টেশন। তার কথাতেও শোনা গিয়েছিল এই একই যুক্তি, “আমি ভূতে বিশ্বাস করি না, এই সবই মানুষের রটানো”! তাহলে এখন ঠিক কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বেগুনকোদর? এখন কি আর তা পশ্চিমবঙ্গের সব চেয়ে কুখ্যাত ভৌতিক স্টেশন নয়?

২০ জুন ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে