এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বরশিতে মাছটি ধরা পড়ায় প্রথমে হতচকিত হয়ে যান তিনি। কারণ এ ধরনের মাছ অন্তত কলকাতাবাসীর চোখে পড়েনি কোনোদিন৷ জীবনেও দেখেননি এই মাছ, দেখলে আপনার পিলে কাঁপবে!
এই মাছের যে ক্ষমতা তাতে একটি লেকের সব মাছকে মেরে ফেলতে পারে। স্থানীয় মৎস্যশিকারি শিবু মণ্ডলের বরশিতে মাছটি ধরার পরই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে৷ বেলেঘাটার সুভাষ সরোবর থেকে উদ্ধার হয় বিরল মাছটি৷
এই মাছ কলকাতার লেকে কীভাবে এল তা নিয়ে রীতিমত দ্বন্দ্বে সবাই। লম্বায় মাছটি প্রায় সাড়ে ৩ ফুট৷ ওজন প্রায় ৫ কেজি৷
‘অ্যালিগেটর গার’ প্রজাতির এ মাছ রাক্ষুসে প্রকৃতির৷ শুধু অন্য মাছকেই যে আক্রমণ করে তা কিন্তু নয়, মানুষের ওপরও আক্রমণ করতে পারে।
এই মাছের ডিমও বেশ বিষাক্ত প্রকৃতির৷ স্বাভাবিকভাবেই এই মাছের ছায়া মাড়ায় না অন্য জলজ প্রাণী৷ তাই বেশ নিরাপদেই থাকে এগুলো৷
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে এই মাছের উপদ্রব রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কলকাতায় এই প্রথমবারের মত দেখা মিলল বিরল প্রকৃতির মাছটি।
মৎস্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অ্যাকোরিয়ামের শখ আছে যাদের, তারা নানা ধরনের মাছ কেনেন৷ কিন্তু একবার এ মাছ স্বমূর্তি ধারণ করলে তাকে অ্যাকোরিয়ামে আটকে রাখা যায় না৷
তখনই হয়তো মাছটিকে জলাশয়ে ফেলে দিয়েছে কেউ৷ অন্য বিরল প্রজাতির মাছের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে৷
মাছটি দেখে প্রথমে ভয়ে চিৎকার করে ফেলেন শিবু৷ তিনি জানাচ্ছেন, বড় রুই বা কাতলা ছিপে পড়লে যেভাবে পানির গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু এই মাছটি তা করেনি৷ বরং অনেকটা কচ্ছপের মতো অলস হয়ে বসেছিল৷
তিনি জানাচ্ছেন, সেই সময় তিনি মাছটিকে পানির উপরে তুলতে শুরু করেন৷ মাছটি দেখে তিনি তখনই স্থানীয় লোকজনকে ডাকেন৷ শিবুর বন্ধুও এরকম একটি মাছ শিকার করেন৷ তিনি সে মাছ রান্নাও করেছিলেন৷
তিনি জানাচ্ছেন, এই মাছের চামড়া যে এত শক্ত হয়, তা করাত দিয়ে কাটতে হয়েছিল৷ মাছের স্বাদও অত্যন্ত তিক্ত।
জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, মাছটির নমুনা সংগ্রহ করতে প্রতিনিধিদের পাঠানো হয়েছে, যাতে করে মাছটি নিয়ে গবেষণার পথ প্রশস্ত হয়৷
২২ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম