এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বর্ষা বড় বেহিসেবি! কোথাও সে নিতান্ত কৃপণের মতো আচরণ করে! কোথাও বা বারিধারায় ডেকে আনে প্লাবন! মোদ্দা কথা, তার রূপ উপভোগের মুহূর্ত বড় একটা সে আমাদের হাতে তুলে দেয় না। মনে করে দেখুন তো, প্রকৃতির ঘন শ্যামলিমা, আকাশের নিবিড় নীলিমার মাঝে ঝর ঝর ধারাপাতে শেষ কবে নিজেকে মেলে দিয়েছিলেন বাঁধন না-মানা পাখির মতন? শেষ কবে আপনার ঘরের জানলার বাইরে পাগল হয়েছে বারিধারা আর সার্থক হয়েছে আপনার বর্ষামঙ্গল?
সেই সব মুহূর্তেরা এক লহমায় ধরা দিতে প্রস্তুত মহারাষ্ট্রের মহাবালেশ্বরে। যেখানে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা অজস্র ছোট-বড় পর্বতশৃঙ্গ প্রকৃতির সবুজ আবরণে নিজেকে মুড়ে, বারিধারায় স্নাত হয়ে অপেক্ষা করছে আপনার জন্য! ঝরনারা অবিরত যেখানে শোনাচ্ছে বর্ষার মঙ্গলগান। আর পাহাড়ের বুক চিরে যাওয়া জলধারার রূপে সাক্ষাৎ দেবতারা অপেক্ষা করছেন আপনার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবেন বলে!
প্রাচীন ভারতের লোক-কাহিনি বলে, একবার দেবতাদের অভিশাপ দিয়েছিলেন মহাসতী দেবী সাবিত্রী। ব্রহ্মা, বিষ্ণু আর মহেশ্বর- তিন জনে এসেছিলেন তার সতীত্বের পরীক্ষা নিতে। ক্রুদ্ধা সাবিত্রী তখন অভিশাপ দেন ত্রিমূর্তিকে- দেবতা হয়েও তারা যখন মানুষের মতো পরিহাসে মেতে উঠেছেন, তখন তাদের বাস করতে হবে পৃথিবীতেই! তা ছাড়া, নারীকে নিয়ে পরিহাস করায় তাদের ধারণ করতে হবে নারী-শরীর!
সাবিত্রীর সেই অভিশাপে বিষ্ণু কৃষ্ণার জলধারারূপে, শিব বেনা নদীর রূপে এবং ব্রহ্মা কোয়েনা নদী হয়ে নেমে আসেন পৃথিবীতে। বেছে নেন মহাবালেশ্বরের এই পবিত্র প্রকৃতি। তিন নদীর সেই পবিত্র জলধারায় প্রতি নিয়ত রূপ বর্ধিত হচ্ছে মহাবালেশ্বরের। বিশেষ করে বর্ষায় তার রূপ উপচে ওঠে, ধারণ করা যায় না দুই চোখের ক্ষুদ্র পরিসরে! মহাবালেশ্বরের একমাত্র উপভোগ্য এবং দ্রষ্টব্য তাই প্রকৃতিই! অজস্র পাহাড়ের চূড়ায় নানা ভিউ পয়েন্ট আপনাকে স্বাগত জানাবার জন্য অপেক্ষা করছে।
সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের অপরূপ মুহূর্ত ছাড়াও এই সব ভিউ পয়েন্ট থেকে ম্যাপের মতো ছড়িয়ে থাকা মহাবালেশ্বরের রূপও কম আকর্ষণীয় নয়! পাশাপাশি, ভ্রমণপিপাসা চরিতার্থ করার জন্য ছোট-বড় ঝরনারা তো রয়েছেই!
কী ভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে মুম্বাই বা কলকাতা। সেখান থেকে পুণে বিমানবন্দরে নেমে গাড়ি ভাড়া করে চলে যাওয়া যায় পুণে শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরের মহাবালেশ্বরে। এছাড়া পুণে জংশনে ট্রেনে নেমে পাড়ি দেওয়া যায় মহাবালেশ্বরের দিকে। স্থলপথে দূরত্ব একটু কমাতে চাইলে নামা যায় সাতারা স্টেশনেও। সেখান থেকে মহাবালেশ্বর মাত্র ৫৫ কিলোমিটার!
২৮ জুন ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস