ইউরোপায় মিললো প্রাণের অস্তিত্ব
নিউজ ডেস্ক : এবার বৃহস্পতির ইউরোপা উপগ্রহে পাওয়া গেছে প্রাণের অস্তিত্ব। পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে বেড়ান যেসব গবেষক, তাদের একটি সাধারণ মূলনীতি হলো, প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে হলে আগে পানির অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে হবে। সম্প্রতি প্রচুর পরিমাণে পানির সন্ধান পাওয়া গেছে বৃহস্পতির ইউরোপা উপগ্রহে। আর তা থেকেই বিজ্ঞানীরা প্রাণের সন্ধান পাওয়ার আশা করছেন।
সৌরজগতের বিভিন্ন অংশে তরল এবং জমাট বাঁধা পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বিভিন্ন গ্রহাণুতে পাওয়া যায় জমাট বরফ। ২০০৯ সালে খোদ পৃথিবীর চাঁদেই অনেকটা জমাট বাঁধা পানি পাওয়া যায়। কিছু গবেষক ধারণা করেন, মঙ্গলের ভূ-পৃষ্ঠে এক সময়ে পানির প্রবাহ ছিল এবং এই বছরেই মঙ্গলের মাটিতে পানির নমুনা পায় NASA’র কিউরিওসিটি। ২০০০ সালেই বৃহস্পতির চাঁদ গ্যানিমিড এবং ইউরোপায় পানির অস্তিত্ব পায় গ্যালিলিও প্রোব, আর এর মধ্যে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন এই দুই চাঁদের জমাট বাধা পৃষ্ঠের নিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পানি।
গ্যানিমিড এবং ইউরোপার এই পানির সন্ধান পাওয়ার পরে বিজ্ঞানীরা চেয়েছেন ওই দুই চাঁদের পৃষ্ঠের নিচে ড্রিল করে প্রাণের উপস্থিতির খোঁজ করতে। কারণ পানি ছাড়াও প্রাণের আরেক প্রয়োজনীয় উপাদান, জৈব যৌগ পাওয়া গেছে ইউরোপায়।
আর পৃথিবীর সাগরের নিচে যেমন থার্মাল ভেন্ট এবং আগ্নেয়গিরি দেখতে পাওয়া যায় তেমনই ইউরোপার জমাট সাগরেও পাওয়া যেতে পারে। এই ঠাণ্ডা-গরমের মিলনে এককোষী প্রাণের উদ্ভব হয়েও থাকতে পারে। তবে এই তত্বের সত্যতা যাচাই করে দেখার জন্য প্রয়োজন পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
দুর্ভাগ্যজনক সত্য হলো, ইউরোপার পৃষ্ঠে এমন জটিল এবং উন্নত একটি ড্রিল মেশিন পাঠানোটাকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং খরচে মনে করছেন অনেকেই। এ কারণে এতদিন পার হয়ে গেলেও এই গবেষণার অর্থায়ন করা হয়নি।
সম্প্রতি এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। NASA হাবল স্পেসশিপ থেকে এমন কিছু ছবি পেয়েছে যা থেকে দেখা যায় ইউরোপার ভূ-পৃষ্ঠ ভেদ করে উঠে এসেছে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের জেট। প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে এই জেট পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতির উচ্চ মাত্রার মহাকর্ষের টানে এর চাঁদে এমন জেট তৈরি হচ্ছে। এরা মোটামুটি ২০০ কিলোমিটার উঁচু বলে মনে হয়। এমন জেট আবিষ্কৃত হবার কারণে বিজ্ঞানীরা যারপরনাই খুশি। কারণ এখন আর ড্রিল করে এর পৃষ্ঠে ফুটো করতে হবে না। এমনকি নমুনা সংগ্রহের জন্য ইউরোপার পৃষ্ঠে কোনো মহাকাশযানের অবতরণ করারও দরকার হবে না। এর বায়ুমণ্ডলে ভেসে বেড়ানোর মাধ্যমেই নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
এমন তথ্য পাওয়ার পরে গবেষকরা আশা করছেন, শিগগিরই স্বয়ংক্রিয় কোনো মহাকাশযান ইউরোপায় পাঠানোর মিশন তৈরি করা হবে এবং পৃথিবীর বাইরে প্রাণের নমুনা পাওয়ার অভূতপূর্ব নিদর্শন সৃষ্টি হবে।
২৬ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস