শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:২৪:০৩

হুমকির মুখে ২১ হাজার প্রাণী

হুমকির মুখে ২১ হাজার প্রাণী

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : তালিকাভুক্ত করা হয়েছে হুমকির মুখে থাকা বেশ কিছু প্রজাতির প্রাণীর নাম। তালিকাভুক্ত এসব প্রাণীর মধ্যে বালি টাইগার, এশিয়ান হাতি, আফ্রিকার ওকাপিসহ রয়েছে প্রায় ২০০ পাখি। ১৯৬৩ সাল থেকে হুমকির মুখে থাকা এই রেড লিস্ট প্রকাশ করে আসছে ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন ইউনিয়ন (আইইউসিএন)। তাদের মতে, এখনও প্রায় ২১ হাজার প্রাণী হুমকির মুখে রয়েছে।

সম্প্রতি এ সংস্থাটি হুমকির তালিকায় থাকা প্রাণীদের নাম প্রকাশ করেছে। তালিকা অনুযায়ী, একেবারে তলানিতে আছে ওকাপির নাম। ওকাপির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানা যায়। জিরাফের মতো দেখতে এই ওকাপির বাস কঙ্গোতে। এরাই এখন সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে। কঙ্গোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে থাকা এই ওকাপির সংখ্যা নব্বইয়ের দশকে ছিল ৪,৪০০। দশ বছর পর এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৫০০ তে। কঙ্গোর সহিংসতা এবং খনি ব্যবসাকে এ জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

এছাড়াও কিছু প্রাণী রয়েছে বিলুপ্তির পথে। আইইউসিএন জানিয়েছে, এমন অনেক প্রাণী আছে, আজ থেকে ২০০ বছর আগেও যাদের অস্তিত্ব ছিল সেগুলোও এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যেমন বালি টাইগার। তাছাড়া বাঘের অন্যান্য প্রায় সব প্রজাতিই আজ হুমকির মুখে।

হুমকির মুখে থাকা প্রাণীগুলোর মধ্যে অন্যতম জায়ান্ট পান্ডা। বিশ্বে এদের সংখ্যা মাত্র ১০০০ থেকে ২০০০। আর আছে সুমাত্রার গন্ডার, যাদের মোট সংখ্যা মাত্র ২২০। এছাড়া লাইবেরিয়ার লিঙ্কসও আছে এই তালিকায়। এদের সংখ্যা মাত্র ৮০ থেকে ১৫০টি।

নতুন এ তালিকায় রয়েছে দুইশ প্রজাতির পাখির নাম। এদের মধ্যে অনেক শকুন আছে, যাদের বাস ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়। আইইউসিএন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, চীন ও মালয়েশিয়ার অনেক শকুন এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে। ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা অনেক শকুন এখন হুমকির মুখে।

এশিয়ার হাতি দ্রুত কমছে বলে তালিকায় প্রকাশ। বিশ্বে এখনও এশিয়ান হাতির সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ হাজার। কিন্তু এরাও হুমকির মুখে রয়েছে। গত তিন প্রজন্ম ধরে এই প্রজাতির হাতির সংখ্যা কমছে। আইইউসিএন বলছে, তিন প্রজন্মে হাতির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান হাতি দেখতে পাওয়া যায়। কেবল এশিয়া নয়, আফ্রিকার হাতিরাও হুমকির মুখে। বন উজাড় এবং দাঁতের জন্য শিকারিদের উৎপাতও হাতিদের সংখ্যা কমানোর জন্য দায়ী। সেইসাথে অবৈধভাবে শিকার এবং চুরি করে পাচার করাও দিন দিন বাড়ছে। হাতি পাচার রোধে ২ থেকে ৪ ডিসেম্বর বতসোয়ানায় ‘আফ্রিকান এলিফেন্ট সম্মেলন’-এর আয়োজন করে আইইউসিএন।

বিলুপ্তির পথে রয়েছে কিছু মাছও। ডলফিনের মতো দেখতে এই পরপয়েসদের সচরাচর দেখা যায় ক্যালিফোর্নিয়ায়। মাছ ধরার জালে আটকে প্রায়ই মারা যায় এরা। কখনো কখনো জেলেরা এদের ধরে নিয়ে যায়। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে এই প্রজাতিটি। বিশ্বে এখন মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ পরপয়েস রয়েছে।

এতো কিছুর মধ্যে কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলেও জানা যায়। কিছু কিছু প্রজাতির ক্ষেত্রে অবশ্য উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেমন লেদারব্যাক কচ্ছপ। অথচ এক দশক আগে এই প্রজাতির কচ্ছপটি ছিল রেড লিস্টে, অর্থাৎ হুমকির মুখে। দুই মিটার লম্বা এবং আধা টন ওজনের এই কচ্ছপগুলো আকারে সবচেয়ে বড় হয়। সাগরের দূষণের কারণেই এরা হুমকির মুখে বলে জানা যায়।

এদিকে ব্ল্যাকব্রোও অ্যালবাট্রসের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। নতুন তালিকায় এই প্রজাতির পাখির আশানুরূপ উন্নতি হয়েছে। আইইউসিএন এর পরিচালক ইয়ান স্মার্ট জানান, অনেক প্রজাতির উন্নতি হলেও এখনও ২১,০০০ প্রাণী হুমকির মুখে রয়েছে।
২৬ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে