শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:৪২:১৭

২০ বছরের গুহা মানব !

২০ বছরের গুহা মানব !

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: মানুষ যখন দিন দিন অলস ও আরাম প্রিয় হয়ে যাচ্ছেন ঠিক তখনই এক ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটালেন চীনের এক বাসিন্দা । নাম তার ফেং মিংশান । শহর ও লোকালয়ের জরাকীর্ণ কোলাহল তাকে বিরক্তের শেষ প্রান্তে ঠেলে দিচ্ছিল ।

তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না, সে কি করে এতো কোলাহল, হিংসা-বিদ্বেষ, রাহাজানি, ভাবনা-চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্তি দেবেন । ফেং বার বার ভাবতে ভাবতে এক সময় তার মাথায় বুদ্ধি এলো, তিনি গুহায় বাস করবেন। আমাদের আদি বংশধরেরা তো এক সময় গুহাতেই বসবাস করতেন। তাহলে তিনি কেন পারবেন না।

অবশেষে নগর জীবনের শান্তির খোঁজে তিনি আশ্রয় নিলেন গুহায়। চীনের দক্ষিণাঞ্চলের শানজি প্রদেশে এই গুহা অবস্থিত। ফেং বসবাস করতেন গোয়াবাডিয়ানে। গোয়াবাডিয়ান থেকে তার গুহার দূরত্ব গাড়িতে দুই ঘণ্টার মতো।

ফেং যখন বাড়ি ছেড়ে গুহায় বসবাস শুরু করেন তখন তার বয়স ছিল ৩৪ বছর। আর এখন তার বয়স ৫৪ বছর। এরই মধ্যে তার জীবন থেকে চলে গেছে ২০টি বছর।

এই সময়টি তার কেটে গেছে গুহায়। নগরের সব কোলাহল, হইচই, নানা চাহিদার আর্তনাদ- সব কিছু দূরে ঠেলে বাস করছেন এক নীরব-নিস্তব্ধ-নির্জন গুহায়। ফেং ১৯৯৩ সালে যখন গুহায় আসেন তখন এই গুহা ছিল বেশ সংকীর্ণ এক গুহা। ছিল না কোন জানালা।

তিনি একটা হাতুড়ি দিয়ে ভাঙতে ভাঙতে বাড়াতে থাকেন গুহায় থাকার জায়গাগুলো। গুহার প্রবেশ মুখে দরজাও বসান ফেং সাহেব। জানালাও আছে তার গুহায়। মাটি থেকে ৫০ ফুট উঁচু তার এই গুহাটি। তবে এতো সহজে তিনি গুহায় উঠতে পারেন না।

হাত-পায়ে কসরত করে তবেই উঠতে হয় তার বর্তমান আবাসস্থানে। ফেং গুহা থেকে খুব একটা বাইরে বের হন না। দরকারি কিছু কাজ সারার জন্যই বাইরে আসেন।

বাস করছেন একেবারে সন্ন্যাসীর মতো করে। এরই মধ্যে তাকে সন্ন্যাসী উপাধিও দেয়া হয়েছে। আর যেসব সাংবাদিক তার সাক্ষাৎকার নিতে যান- তার সাথে কথা বলেন গুহার ভিতর থেকেই।

বর্তমান জীবন যাপনের ব্যাপারে ফেংয়ের মতের সঙ্গে মোটেই সম্মত নয় স্থানীয় প্রশাসন। তাদের ধারণা, ফেং একজন স্রেফ মানসিক রোগী। তাকে যত শিগগিরই সম্ভব মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো দরকার।

নগর জীবনে অভ্যস্ত নাগরিকদের কাছে মানসিক রোগী ছাড়া কিছু না হলেও ফেং চলেছেন তার নিজের মতো করে। এই চলার পথ হয়তো একদিন শেষও হবে। কিন্তু তার এই কাহিনী কোন দিন ফুরোবে না।
২৬ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে