শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:৪১:২৭

তুষারযুগের প্রাণী ম্যামথের দেহাবশেষ!

তুষারযুগের প্রাণী ম্যামথের দেহাবশেষ!

নিউজ ডেস্ক : রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ার বরফাঞ্চলে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ম্যামথের দেহাবশেষের সন্ধান পেয়েছে, যার রক্ত ও মাংসপেশীর টিস্যু সংরক্ষিত ছিল। এই দেহাবশেষের সন্ধান এমন এক সময়ে পাওয়া গিয়েছে, যখন বিলুপ্ত প্রজাতিগুলোকে ডিএনএ ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে পুনর্জন্ম দেয়া হবে কি না, সে বিষয়ে বিতর্ক চলছে। সূত্র : ইন্টারনেট।

 

উত্তর-পূর্ব রাশিয়ার আর্কটিক সাগরে নিউ সাইবেরিয়ান দ্বীপপুঞ্জের লিয়াখবস্কি দ্বীপে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ম্যামথের দেহাবশেষ খননের সময় বিজ্ঞানীরা ম্যামথের রক্তের সন্ধান পেয়েছেন। এই রক্ত বরফের নিচে প্রাণীটির পেটে আটকে ছিল। বরফগহ্বর থেকে রক্ত চুইয়ে পড়ছিল, যা গবেষকদের অবাক করেছিল, কেননা সেখানে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল।

 

ম্যামথ মিউজিয়ামের প্রধান সেমিওন গ্রিগরিভ বলেন, এটা আন্দাজ করা যেতে পারে যে ম্যামথের রক্তে কিছু প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ঠ্য ছিল। প্রাণীটির মাংসপেশীর টিস্যুও যথেষ্ট ভালভাবে সংরক্ষিত ছিল এবং লালচে রঙের ছিল।

 

প্রাণীটির দেহাবশেষ এরকম সংরক্ষিত থাকার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, প্রাণীটির দেহের নিচের অংশ বরফের নিচে আটকে ছিল। গবেষকেরা মহিলা ম্যামথটির মৃত্যুকালীন বয়স ৫০-৬০ বছর বলে সনাক্ত করেছেন।

 

 

 

গ্রিগরিভের মতে, এই আবিষ্কারটি আন্তর্জাতিকভাবে সাড়া ফেলতে পারে। তিনি বলেন, আমরাই প্রথম প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ম্যামথের মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছি। তার ওজন হাড্ডি ও বরফসহ এক টন। আমাদের ধারণা, বেঁচে থাকার সময় তার ওজন ছিল তিন টনের মত। জুলাইয়ে সারা বিশ্বের বিশেষজ্ঞদের জন্য দেহাবশেষটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

 

জীবশ্মবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই দেহাবশেষসহ মাত্র তিনটি প্রাপ্তবয়স্ক ম্যামথের দেহাবশেষের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যদিও এর আগের সন্ধানগুলোতে ক্লোন করার মত যথেষ্ট জীবিত কোষ পাওয়া যায়নি।

 

গ্রিগরিভ এর মতে, ডিএনএ সংস্কার করা খুবই জটিল একটি কাজ, যেটা সম্পন্ন করতে বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে। তবে এই সাম্প্রতিক আবিষ্কার ভবিষ্যতে ম্যামথসমূহের পুনর্জন্মের জন্য আশাবাদ জোগাচ্ছে, যদিও ক্লোনিং নিয়ে অনেক বিতর্ক এখনো রয়ে গেছে।

 

 

ম্যামথের বিলুপ্তি :  ম্যামথের বিলুপ্তি নিয়ে এখনও বিতর্কের শেষ হয়নি। কেউ মনে করেন, প্রাগৈতিহাসিক মানুষের অত্যধিক শিকারের অত্যাচারেই লোপ পেয়েছিল হাতিদের পূর্বপুরুষ এই ম্যামথ। আবার কারও মতে, ম্যামথের অবলুপ্তির কারণ আবহাওয়াগত পরিবর্তন।

 

তবে সম্প্রতি দ্বিতীয় মতের সমর্থনে বিজ্ঞানীদের হাতে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ এসেছে বলে দাবি করেছেন সুইডেনের মিউজিয়াম অব ন্যাচরাল হিস্ট্রির অধ্যাপক লাভ ডালেন।

 

এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ম্যামথ জীবাশ্মের ডিএনএ পরীক্ষা করেই নাকি এমন দাবি করেছে তার গবেষক দল।

 

অধ্যাপক ডালেনের বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ম্যামথদের অবলুপ্তি একসঙ্গে শুরু হয়নি। মোটামুটি ২০ হাজার বছর আগের তুষারযুগে ম্যামথদের খাদ্যাভাব দেখা দেওয়ায় তাদের সংখ্যা কমতে শুরু করে।

 

১৪ হাজার বছর আগে তুষারযুগের অবসানে বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ম্যামথদের বাসোপযোগী তৃণভূমি অরণ্যে রূপান্তরিত হয়। এটাও তাদের অবলুপ্তির অন্যতম কারণ। নিশ্চিত হওয়ার আগে এখনও অনেক কাজ করতে হবে বলেই মনে করেন লাভ ডালেন।

২৬ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে