এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ঘন কুয়াশা যখন পাহাড়কে ঢেকে ফেলে, তখন তিনি হেঁটে যান এক ঘর থেকে অন্য ঘরে। যখন গভীর হয় রাত, আঁধারে মুখ ঢাকে চরাচর, শোনা যায় তার পায়ের শব্দ। কখনও বা স্রেফ তার ইচ্ছেতে সশব্দে বন্ধ হয়ে যায় জানলার কপাট। অথবা, হাট করে খুলে যায় ছিটকিনি তোলা দরজা! পরপারের এই রহস্য বুকে নিয়েই জেগে থাকে কালিম্পংয়ের এক অংশ। মর্গ্যান হাউজ ট্যুরিস্ট লজ।
যারাই কালিম্পংয়ে গিয়েছেন, জানেন, এই শৈলাবাসের এক অন্যতম বিখ্যাত হোটেল মর্গ্যান হাউজ। ব্রিটিশ আমলের পুরনো এই বাড়ি পাহাড়ের শোভা, শৈত্য আর সবুজের সমারোহে সগর্বে দাঁড়িয়ে থাকে মাথা উঁচু করে। কিন্তু, রীতিমতো সাহসী না হলে মর্গ্যান হাউজে থাকতে পারেন না কেউই! ভয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন! মর্গ্যান হাউজ যে অভিশপ্ত! আজও এক অতৃপ্ত আত্মা দিনে-রাতে ঘুরে বেড়ায় লজের এক ঘর থেকে অন্য ঘরে।
শোনা যায়, ১৯৩০ সালে এই বাড়ি বানিয়েছিলেন জর্জ মর্গ্যান নামে এক ব্রিটিশ অফিসার। সেই সময়ে ব্রিটিশদের প্রিয় শৈলশহর দার্জিলিং, কাজেই ভিড়ও সেখানে বেশি। ও দিকে মর্গ্যানের ইচ্ছে ছিল স্ত্রীর সঙ্গে পাহাড়ের কোলে নিরিবিলিতে থাকার। তাই তিনি বেছে নিয়েছিলেন কালিম্পংয়ের নিভৃতি!
কিন্তু, মর্গ্যানের ইচ্ছা পূর্ণ হয়নি। স্ত্রীর সঙ্গে তিনি এই বাড়িতে থাকতে পারেননি। আকস্মিক ভাবেই একদিন মৃত্যু হয় লেডি মর্গ্যানের। তার পর, ভগ্ন হৃদয় নিয়ে এই বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে দেশে চলে যান জর্জ মর্গ্যান। ঘটনার অনেক দিন পরে যখন ট্যুরিস্ট লজে পরিণত হয় সাহেবের এই সাধের বাড়ি, তখন থেকেই নজরে আসে ব্যাপারটা- লেডি মর্গ্যান কোথাও যাননি! আজও তাঁর আত্মা এই বাড়িতেই থেকে গিয়েছে।
তবে, লেডি মর্গ্যান আজ পর্যন্ত কারও কোনও ক্ষতি করেননি। তিনি শুধু বাড়িতে পায়চারি করে বেড়ান। শোনা যায় তার হাই হিলের শব্দ। কখনও বা শোনা যায় তার চাপা কণ্ঠস্বর। ফিসফিস করে তিনি কিছু একটা বলতে চান ট্যুরিস্টদের। স্বাভাবিক ভাবেই তারা ভয় পেয়ে যান! আর লজে থাকতে সাহস পান না! আপনি কিন্তু চাইলে ঘুরে আসতে পারেন মর্গ্যান হাউজ থেকে। লেডি মর্গ্যান শুধু তার বাড়িতে যারা আসছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চান! তার বেশি আর কিছুই নয়!
৫ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস