ঢাকা : ঈদ আসে সবার জন্য। এই আনন্দ ভাগাভাগি করার আনন্দে মেতে উঠতে পারে সবাই। ঈদের দিনে তাদের ঘোষণা আমরা খুঁজে খুঁজে ডালিংদের বাসায় যাব, ফূর্তি করব। মজা করব।
তাদের মনের ভাষার সাথে অমিল রয়েছে স্বাভাবিকতার। ঈদের দিনে রাজধানীর বিনোদন স্পটগুলোতে ব্যতিক্রমি আড্ডা থাকে রং বেরংয়ের ড্রেসে সজ্জিত এই নারীসুলভদের।
ঈদের হাওয়ায় যখন মাতোয়ারা সবাই তখন জানতে চেষ্টা করা তৃতীয় লিঙ্গের তথা হিজড়াদের ঈদ ভাবনা। কথা হয় বেশ কয়েকজনের সাথে। তাদের বেশিরভাগেরই একই উক্তি আমরা ঈদে ডার্লিংদের বাসায় বাসায় যাব, অনেক মজা হবে।
হিজড়াদের প্রতি নারী-পুরুষের চিন্তায় বৈষম্য রয়েছে বলে উঠে আসে কথপোকথনের মধ্যে দিয়ে। তৃতীয় লিঙ্গের অধিকারী কৃষ্ণা। হিন্দু ধর্মালম্বী এই হিজড়ার বয়স ২৬ বছর। চাঁদ রাতে ঈদের কেনাকাটাও করেছেন।
আর মগবাজারের তার বাসায়ও ছিল ঈদ কেন্দ্রিক ব্যাপক আয়োজন। হিন্দু হলেই ঈদ উদযাপনে বেশ আগ্রহ তার। কথা হয় শাহজাহানপুরের ১০নং কলোনির বাসিন্দা জয়নালের সঙ্গে। স্থানীয়দের কাছে ‘জয়নাল হিজড়া’ নামেই বেশি পরিচিত তিনি।
তিনি বলেন, শুধু মাইনষে ঈদ করবে! আর আমরা বসে বসে দেখবো? আমগোও টাকা আছে। সঙ্গে ঈদও আছে। ঈদে ডালিংদের বাসায় ঘুরে বেড়াব। কথা হয় মহাখালীর দোলা ইজড়ার সাথে।
তার ঈদ ভাবনায় বন্ধুদের নিয়ে ডালিং তথা বৃত্তবানদেন বাসায় বাসায় যাওয়ার। আড্ডার সাথে মোটা অংকের অর্থও পটেকে ভেড়ানোর কথা বলেন তিনি। শক্তি-দাপটের জন্য দল বেঁধে চলার কথা বলেন তিনি।
এদিকে খিলগাঁওয়ের ময়না খালা নামে পরিচিত গুরু মা স্থানীয় হিজড়াদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে প্রায় দুই লাখ হিজড়া আছে। ঈদে দল বেঁধে আনন্দ করতে পছন্দ করেন তারা।
প্রসঙ্গত, অনেক সময় হিজড়াদের বিড়ম্বনায় পড়ে সাধারণ মানুষ। জোড় করে টাকা নেয়া, বাচ্চা নিয়ে যাওয়া, বিয়েতে বাধা দেয়াসহ নানা অভিযোগ থাকে তাদের বিরুদ্ধে। এর মূল কারণ হিসেবে তাদের কন্ঠ থেকেই উঠে আসে বিয়ে ও সুনির্দিষ্ট কোনো কাজের ব্যবস্থা না থাকা।
হিজড়ারা তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে শঙ্কিত থাকে। তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতির সাথে সমাজের অন্যান্যদের মত সব কিছুতে অংশ নিয়ে স্বাভাবিক জীবনের পক্ষে বেশিরভাগ হিজড়ারা।
৬ জুলাই ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর