বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬, ০৮:৫৬:২১

এই বই পড়লেই সমস্ত অশুভ শক্তি চলে আসবে আপনার হাতের মুঠোয়!

এই বই পড়লেই সমস্ত অশুভ শক্তি চলে আসবে আপনার হাতের মুঠোয়!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ১৯৮৯ সালে তৈরি স্টিভ মাইনার পরিচালিত ‘ওয়ারলক’ নামের ইংরেজি সিনেমাটি দেখা আছে? তাতে অভিনেতা জুলিয়ান স্যান্ডস যে চরিত্রে রূপদান করেছিলেন, সেই ওয়ারলক নামের খল চরিত্রটি হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছিল একটি বই। সেই বইয়ে নাকি লেখা রয়েছে স্বয়‌ং সৃষ্টি কর্তার একটি গুপ্ত নাম। সেই নামটি যদি একবার উল্টোদিক থেকে উচ্চারণ করা যায়, তা হলেই ধ্বংস হয়ে যাবে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। নাম মনে আছে সে বইয়ের? ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমওয়্যার’। কী ভাবছেন? সেই বই আসলে চলচ্চিত্রের কাহিনি-রচয়িতার কল্পনাপ্রসূত একটি অবাস্তব বিষয় মাত্র? তাহলে সম্পূর্ণ ভুল ভাবছেন।

‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’ ওরফে ‘দি রেড ড্রাগন’ ওরফে ‘দি গসপেল অফ স্যাটান’ আদপে চূড়ান্ত রহস্যে মোড়া এক বই। বাইবেলে উল্লিখিত রাজা সলোমনের যে সমাধিটি রয়েছে জেরুজালেমে, সেখান থেকে ১৭৫০ সালে এই বই আবিষ্কৃত হয়। বাইবেলীয় হিব্রু বা প্রাচীন অ্যারামাইক ভাষায় এই বই রচিত। বিশেষজ্ঞরা হাতে-লেখা এই বইয়ের লিপি পরীক্ষা করে দেখেছেন, এটি ১৫২২ খ্রিস্টাব্দে রচিত। তবে মূল বইটি, তাদের মতে, আরও প্রাচীন, সম্ভবত ১২শ শতকের। সলোমনের সমাধি থেকে বইয়ের যে সংস্করণটি পাওয়া যায়, সেটি মূল বইটির নকল মাত্র।

রোমান ক্যাথলিক চার্চ দাবি করে, বর্তমানে বইটি রয়েছে তাদের কাছে। তবে সাধারণ মানুষের অধিকার নেই সেই বই দেখার। কারণ, এই বইয়েই নাকি লেখা রয়েছে যে কোনও সময়ে খোদ শয়তানকে ডাকা এবং তাকে দিয়ে যে কোনও অশুভ কাজ করিয়ে নেওয়ার উপায়। যাঁরা খ্রিস্ট বা অন্যান্য অ্যাব্রাহামিক ধর্মে শয়তান বা স্যাটান-এর প্রকৃত তাৎপর্য জানেন না তাঁদের বলে রাখা যাক, এই ‘শয়তান’ যেকোনও এলেবেলে দুর্মতি লোক নয়, বরং সে হল যাবতীয় অশুভ শক্তি ও অহিতকর চেতনার চরম দ্যোতক।

‘গ্রিমোয়্যার’ শব্দটির অর্থ শুভ কিংবা অশুভ— যে কোনও রকমের জাদুবিদ্যা। নানাবিধ উদ্ভট ও কালো জাদুর বিবরণে পূর্ণ ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’ বইটি ১২শ শতকের মানুষ পোপ তৃতীয় অনোরিয়াসের লেখা বলে মনে করা হয়। এমনও বলা হয় যে, এই অনোরিয়াস নিজেই ছিলেন শয়তান, কিংবা শয়তান ভর করেছিল তাঁর উপরে। ফলে ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’ আদপে স্বয়ং শয়তানেরই লেখা বলে অনেকের ব্যাখ্যা। বলা হয়, শয়তান-লিখিত এই বই নাকি আগুনে পোড়ে না, ছেঁড়া যায় না এই বইয়ের পাতা, ফুটো করা যায় না ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে।

বইটির অনেকগুলি নকল বিশ্বের নানা কালো জাদুর অনুশীলনকারীরা নিজেদের কাছে রেখে থাকেন, এবং এই বইয়ে বিবৃত উপায় অনুসারে কালো জাদুর চর্চা করে থাকেন। কিন্তু কোনও কৌশলই শয়তানকে আহ্বান করা বা তাকে নিজের অধীনস্থ করার পক্ষে তেমন কার্যকর নয়। কারণ শয়তানকে নিজের চাকর বানানোর একেবারে অব্যর্থ উপায়টি লেখা রয়েছে কেবল ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’-এর সেই আসল সংস্করণটিতে, যেটি সংরক্ষিত রয়েছে ভ্যটিক্যানের গুপ্ত ভাণ্ডারে।

সৃষ্টিকে ধ্বংস করার যে কৌশল এই বইয়ে উল্লিখিত রয়েছে বলে জানিয়েছিল ‘ওয়ারলক’ সিনেমার কাহিনি, তা অবশ্য সত্যি নয় বলেই জানিয়েছেন ফিল্মের কাহিনিকার ডেভিড টুহি। তিনি স্বীকার করেছেন, ওটা ছিল তাঁর কল্পনাপ্রসূত একটি বিষয় মাত্র। কিন্তু মূল বইটি কি সত্য? সত্যিই কি এমন কোনও বই রয়েছে রোমের ক্যাথলিক চার্চের গুপ্ত ভাণ্ডারে যাতে লেখা রয়েছে শয়তানকে আহ্বান করার উপায়? সেই প্রশ্নের সদুত্তর মেলে না, কারণ রোমের ক্যাথলিক চার্চের অন্দরেও এমন কোনও মানুষকে পাওয়া যায় না, যিনি শপথ করে বলতে পারেন ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’ বইটি তিনি নিজে পড়েছেন।

কিন্তু কোনও পোপও কি কখনও কৌতূহলবশত পড়ে দেখেননি এই বই, তাঁর তো এই বই পড়তে বাধা নেই কোনও। কালো জাদুতে বিশ্বাসী মানুষরা বলছেন, কোনও মানুষ পোপ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরেই সে আর মানুষ থাকে না, স্বয়‌ং শয়তান ভর করে তার উপরে। আর শয়তানের ভর হওয়া মানুষ কি আর ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’ সম্পর্কে খোলসা করে বলবে কিছু? তা কালো জাদুকররা এসব গুহ্যকথা জানলেন কী করে? তাঁদের সহজ উত্তর— এসবও নাকি লেখা রয়েছে ওই ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’-এই। পরম্পরা সূত্রে তাঁরা জেনে ফেলেছেন সেই সত্য। ফলে সব মিলিয়ে রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হতে থাকে ‘দি গ্র্যান্ড গ্রিমোয়্যার’কে ঘিরে। সূত্র : এবেলা
১৪ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে