রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৬, ০৫:৫৭:১৭

বিটামিনের তৈরি ব্যাটারি দিয়ে আলো জ্বলবে, গাড়িও চলবে একেবারে সস্তায়!

বিটামিনের তৈরি ব্যাটারি দিয়ে আলো জ্বলবে, গাড়িও চলবে একেবারে সস্তায়!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভাবুন, ডাক্তাররা আমাদের যে ভিটামিন খেতে দেন আমরা দুর্বল হয়ে পড়লে, সেই ভিটামিনই এবার ব্যাটারি চালাবে! যে ব্যাটারি দিয়ে আলো জ্বলবে! গাড়িও চলবে! করা যাবে অন্যান্য কাজও।

আর সেই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি আদৌ দাহ্য ও বিষাক্ত বস্তু হবে না বলে আমরা নিশ্চিন্ত থাকতে পারব। আবার সেই ব্যাটারি আক্ষরিক অর্থেই হবে এক ‘অক্ষয়কুমার’! সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যার কোনো ক্ষয় হবে না। ওই ভিটামিনের ব্যাটারি বানানোর খরচ কম হয় বলে তার দামও হবে খুবই কম। হবে সহজলভ্যও।

আপাতত, শুধুই ভিটামিন বি-টু’র মধ্যে সেই অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা দেখা গিয়েছে, যা বিদ্যুৎ পরিবহণ করতে পারে আর তৈরি হওয়া বিদ্যুৎশক্তিকে সঞ্চয়ও করতে পারে। চাঞ্চল্যকর গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার-এনার্জি’ জার্নালে, জুলাইয়ের শুরুতে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নশাস্ত্রের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো কাইশিয়াং লিন তার গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ‘এর আগে এমন চমকে দেয়া ধর্ম দেখা গিয়েছিল একটি জৈব অণু ‘কুইনোন’ আর একটি ফুড-অ্যাডিটিভ ‘ফেরোসায়ানাইড’-এর মধ্যে। কিন্তু, ভিটামিন বি-টু’র মধ্যে আমরা যে ক্ষমতার সন্ধান পেয়েছি, তা এক কথায় অভূতপূর্ব। এটা খুব সহজেই তড়িৎ সংশ্লেষ করতে পারে। তা সঞ্চয় করতে পারে। প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ পরিবহণ করতে পারে। আর খুব সস্তায় আর সহজে ভিটামিন বি-টু বানানো যায় বলে বাণিজ্যিক ভাবেও এর উৎপাদন লাভজনক হয়ে উঠবে।’

সহযোগী গবেষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদ্যার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর উষসী মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘খাদ্যের জারণের পর যে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়, দেহে তা সঞ্চয় করে রাখার কাজে বড় ভূমিকা নেয় ভিটামিন বি-টু। ওই ভিটামিন বি-টু বিদ্যুতেরও সঞ্চয় ও পরিবহণ করতে পারে কি না, সেটা দেখার জন্য ভিটামিন বি-টু’র ওই গুণটিই আমাদের উৎসাহিত করেছিল। আমাদের শরীরে একই কাজ করে জৈব অণু ‘কুইনোন’ আর ফুড-অ্যাডিটিভ ‘ফেরোসায়ানাইড’। কিন্তু কোনো ব্যাটারিতে তড়ি‌ৎশক্তি সঞ্চয় করার জন্য যে ইলেকট্রোলাইট (তড়িৎ-দ্রাবক) লাগে, তার জন্য ‘কুইনোন’ আর ‘ফেরোসায়ানাইডে’র চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে ভিটামিন বি-টু। কারণ, তড়িৎশক্তির সঞ্চয় ও পরিবহণের জন্য অক্সিজেনের বদলে নাইট্রোজেন পরমাণু ইলেকট্রন দেয়া-নেয়া করে ভিটামিন বি-টু’র অণুতে। যা অনেক সহজে হয়। হয় দ্রুততরও। এই ভিটামিনের ব্যাটারি অনেক বেশি স্থায়ী হবে। তার সঞ্চয়-ক্ষমতা অনেক বেশি হবে। আর তা অনেক হাই-ভোল্টেজের বিদ্যুৎও উৎপাদন করতে পারবে।’

উষসীর কথায়, ‘ভিটামিন বানানো খুব সহজ। আর বিশেষ করে, ভিটামিন বি-টু বানানো যায় খুব সস্তায়। সহজেও। ফলে, ব্যাটারির ইলেকট্রোলাইটের জন্য ভিটামিন বি-টু’র বাণিজ্যিক উৎপাদনে কোনো অসুবিধা হবে না। উৎপাদন খরচ কম হবে বলে সেই ব্যাটারির দামও খুব কম হবে।’

উষসী বলছেন, ‘আমাদের গবেষণার ফলাফল দেখাচ্ছে, যে ধরনের বিদ্যুৎশক্তি সাময়িক হয়, যেমন, সৌর-বিদ্যুৎ ও হাওয়া-বিদ্যুৎ, সেই বিদ্যুৎশক্তিকে অনেক বেশি সময় ধরে সঞ্চয় করে রাখার কাজে ‘কুইনোন’ বা ‘ফেরোসায়ানাইড’-এর চেয়ে অনেক বেশি সহায়ক হবে এই ভিটামিন বি-টু।’-আনন্দবাজার
২৪ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে