শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৬, ০৮:৪৮:৩১

কেন বাংলাদেশে ছুটে এল ইংল্যান্ডের এই তরুণী?

কেন বাংলাদেশে ছুটে এল ইংল্যান্ডের এই তরুণী?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : জন্ম থেকেই তিনি বধির।  জীবনে প্রথম কোনো কিছু শুনতে পাননি বছর ৩৯-এর তরুণী জো মিলেন।  কানে ফিট করা হয়ে এক যন্ত্র, যার নাম ককলিয়ার।

একজন নার্স জো মিলেনকে কিছু পড়ে শোনাচ্ছিলেন, সেটা শুনে তার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়াতে থাকে।  লাখ লাখ মানুষ ইন্টারনেটে সেই ভিডিও দেখেছেন।

জো যেভাবে যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্রবণশক্তি ফিরে পেয়েছেন, বাংলাদেশের শত শত বধির শিশুকেও সেভাবে শ্রবণশক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করতে চান তিনি।

সেজন্য তিনি গিয়েছিলেন বাংলাদেশে।  বাংলাদেশকে বেছে নেয়ার কারণ হলো- সেখানেই থাকেন তার শৈশবের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

জো মিলেন এবং আমিনা খান দুজনের বন্ধুত্বের শুরু তখন তাদের বয়স যখন ১১।  উত্তর পূর্ব ইংল্যান্ডের গেটসহেডের এক এলাকায় থাকতেন তারা।

দুজনেই আলাদা।  একজন বধির আর অন্যজন পুরো এস্টেটের মধ্যে একমাত্র এশিয়ান।  স্কুলে, খেলার মাঠে তাদের অন্য বন্ধুদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সইতে হতো রীতিমত।  তার মধ্যে এ দুজনের মধ্যে গড়ে উঠে বন্ধুত্ব।

কিন্তু ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায় আমিনার।  চলে যান বাংলাদেশে।  দুজনের আবার দেখা বহু বছর পর, যখন জো ফিরে পেলেন তার শ্রবণশক্তি।

আমিনা বলেন, যখন আমরা বেড়ে উঠছিলাম, তখন আমরা ঠিক করেছিলাম, বড় হয়ে আমরা বাংলাদেশের গরিব ছেলেমেয়েদের সাহায্য করার চেষ্টা করবো।  

বাংলাদেশে পাঁচ শতাংশ শিশু বধির।  এদের অন্তত পাঁচশ'জনের কানে ‘হিয়ারিং এইড’ ফিট করার পরিকল্পনা নিয়েছেন জো।  এ কাজে তার সহযোগী একটি মার্কিন ব্যান্ড দল ‘দ্য অসমন্ডস’।

যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যের এই মার্কিন ব্যান্ডদলটি ছয় ভাইকে নিয়ে গড়া।  তাদের বড় ভাইও বধির। ইন্টারনেটে জো মিলেনের শ্রবণশক্তি ফিরে পাওয়ার ভিডিও যখন তারা দেখলো, তারা ঠিক করলো, অন্য বধিরদের সাহায্য করতে কিছু একটা করবে।  সেখান থেকেই বাংলাদেশ প্রজেক্টের যাত্রা শুরু।

জো বাংলাদেশে গেলেন।  বহু বছর পর সাক্ষাৎ হলো বাল্যবন্ধু আমিনা খানের সঙ্গে।  ঢাকায় বধির শিশুদের জন্য ক্লিনিক বসলো্, যেখানে পাঁচশ' শিশুর কানে ফিট করা হবে ‘হিয়ারিং এইড’।

সেখানে দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন রোকেয়া বেগম।  তাদের সবার কানে ফিট করা হয়েছে হিয়ারিং এইড।  ওরা এখন কথা শুনতে পায়, জানালেন তিনি।

১৬ বছরের মরিয়মও এসেছিলেন সেখানে।  তিনি বলেন, এখন আমি কবুতরের ডাকও শুনতে পাই।  জো মিলেন যা ফিরে পেয়েছেন, অন্য শিশুদেরও ফিরে পেতে সাহায্য করতে পেরে খুবই আনন্দিত।

জো মিলেনের কানে যে যন্ত্রটি লাগানো আছে তার নাম ককলিয়ার।  এটি খুবই অত্যাধুনিক একটি যন্ত্র। পৃথিবীর যাবতীয় শব্দ, কথা, সুর থেকে প্রায় পুরো দু'কান ভরে তিনি এসব শুনতে পান।  তবে এখন তিনি চান, তার মতো বধিরদের সাহায্য করার।  তথ্যসূত্র : বিবিসি
 ৩০ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে