রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬, ০২:২৫:৫৮

বিশ্বাস করুন, এই অফিসে কাজ করতেন এক অশরীরী!

বিশ্বাস করুন, এই অফিসে কাজ করতেন এক অশরীরী!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভূতেদের কেমন দেখতে হয়? হিলহিলে শরীর, কালো গায়ের রং, কুলোর মতো কান আর মুলোর মতো দাঁত- এই বর্ণনা কিন্তু সত্যি নয়। মানুষ যেমন নানা রকমের দেখতে, ভূতও তাই!

তা বলে ভূতকে দেখতে হবে হুবহু মানুষের মতোই? কোনওই তফাত বোঝা যাবে না? দিল্লী পাশেই গুরগাঁওয়ের স্যাফরন বিপিও-র কর্মীদের উত্তরটা কিন্তু হ্যাঁ-ই হবে। তাদের জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসবে, একটানা অনেকগুলো বছর কাজ করেও তারা বুঝতে পারেননি, সহকর্মী মানুষ নন!

মেয়েটির নাম ছিল রোজ। আসল নাম এটা নয়। যাতে তার পরিবারের লোকজনকে মানুষের কৌতূহলের মুখে পড়তে না হয়, সেই জন্যই নাম বদলে দিয়ে ঘটনাটা জানিয়েছেন তার একদা সহকর্মীরা।

সহকর্মীরা আজও বলেন, রোজের মতো সাফ চরিত্রের মেয়ে তারা বড় একটা দেখেননি। যেমন ছিল তার রূপ, তেমনই গুণ। যত মেজাজ খারাপ নিয়েই কেউ অফিসে আসুন না কেন, রোজ পলকের মধ্যে হাসি-মশকরায়-সান্ত্বনায় তার মেজাজ ঠিক করে দিত। কাজ সে ফেলে রাখত না কখনই। অফিসের ছোট থেকে বড় কর্মী- প্রত্যেকের সঙ্গেই ছিল তার বন্ধুত্বের সম্পর্ক। মানুষকে তার যোগ্য সম্মান দিতে জানত রোজ।

তবে, সে কিন্তু গুরগাঁওয়ের মেয়ে ছিল না। এসেছিল বাইরে থেকে। একটা ভাড়া বাড়িতে থেকে সে কাজ করত।
এক দিন একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটল। রোজ ব্যস্ত ছিল নিয়মমাফিক আসা ফোন কলে। বিজনেস কল খুব একটা বেশি সময়ের সাধারণত হয় না। কিন্তু, সেই কলটা ছিল বেশ দীর্ঘ। এবং, সেটা বিজনেস কলও ছিল না। রোজ চেনাজানা কারও সঙ্গেই কথা বলছিল।

কথা বলা হয়ে গেলে পলকের মধ্যে রোজের চেহারা পালটে যায়। তাকে খুবই ফ্যাকাসে দেখাচ্ছিল। অসুস্থ মনে হচ্ছিল। জিনিসপত্র গুছিয়ে সে উঠেও পড়ে। কারও সঙ্গে কোনও কথা না বলেই অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। তার পর সে আর কোনও দিনই অফিসে ফিরে আসেনি!

স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তায় পড়ে স্যাফরন বিপিও। রোজের মতো কর্মী কোনও অফিসই হারাতে চাইবে না। তা ছাড়া, অফিসের সবাই তাকে খুব পছন্দও করত। তাই সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করেও যখন যোগাযোগ করা গেল না, অফিসের লোকজন গেল রোজের বাড়িতে। যেখানে সে ভাড়া থাকত।

আশ্চর্যের ব্যাপার, বাড়িওয়ালা রোজকে চিনতে পারেননি! তিনি বলেন, এই নামে এই বাড়িতে কেউ ভাড়া থাকে না। এমনকী, সেই সময় সেই বাড়ি ফাঁকাই ছিল। কোনও ভাড়াটেই ছিল না।

রহস্য বাড়তে থাকে। অনুসন্ধানের পরবর্তী ধাপ হিসেবে খোঁজ চলতে থাকে রোজের বাড়ির। অবশেষে রোজের বায়োডেটা থেকে ঠিকানা উদ্ধার করে সবাই পৌঁছন তার বাড়িতে।

এখানে রোজের খোঁজ মেলে। এই ঠিকানা সঠিক ছিল। তবে, রোজের সঙ্গে দেখা হয়নি। তার বাবা জানান, রোজ ঘটনার বছর আটেক আগে মরে গিয়েছে। তার পক্ষে অফিসে কাজ করা তাই সম্ভবই নয়। মেয়ের ছবিও দেখান বাবা। সবাই বলে, এই মেয়েটিই এতগুলো বছর ধরে কাজ করেছে তাদের সঙ্গে।

আরও খোঁজখবরের পরে সত্যিটা জানা যায়। রোজকে গুরগাঁওয়ের যে জায়গায় কবর দিয়েছিলেন বাড়ির লোকজন, সেই জমিতেই পরে গড়ে ওঠে স্যাফরন বিপিও’র অফিস। সেই জন্যই রোজ ওই জায়গা ছেড়ে কোথাও যায়নি।

ঘটনাটা জানার পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন রোজের এক অফিসের বান্ধবী। তার সঙ্গেই সব চেয়ে বেশি হৃদ্যতা ছিল রোজের। অন্যদের মধ্যেও অস্বস্তিটা এতটাই চাড়িয়ে যায় যে অনেকে অসুস্থ হয়ে যান। এভাবে কি হামেশাই ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকে অশরীরীরা? চোখের সামনেই থাকে, আমরাই বুঝতে পারি না?

৩১ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে