শুক্রবার, ০৫ আগস্ট, ২০১৬, ০৩:৪৯:৩১

জঙ্গিরা কীভাবে অল্পবয়সিদের মগজ ধোলাই করে, জেনে নিন

জঙ্গিরা কীভাবে অল্পবয়সিদের মগজ ধোলাই করে, জেনে নিন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: কেবল আইএস বা অন্যান্য ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন নয়, ইউরোপ জুড়ে তলায় তলায় বেড়ে ওঠা খ্রিস্টান উগ্রবাদী সংগঠনগুলিও একইভাবে সংগ্রহ করে তাদের আত্মোৎসর্গে পিছপা না-হওয়া ক্যাডার। কী সেই মন্ত্র, যা উদ্বুদ্ধ করে চলেছে এত মানুষকে?

বিশ্বের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে এই জিজ্ঞাসা উদয় হওয়াটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়, কী উপায়ে জঙ্গিগোষ্ঠী গুলি তরুণ বয়স্কদের দলে টানে। এর উত্তর একটাই ব্রেনওয়াশ। কিন্তু আজকের দুনিয়ায় দাঁড়িয়ে এটাও মনে হতে পারে, কমিউনিকেশন-বিপ্লবের তুঙ্গ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কীভাবে একজন সতেরো-আঠেরো বছরের ছেলের মগজ ধোলাই সম্ভব? বিষয়টা বেশ ঘোরালো।

কেবল আইএস বা অন্যান্য ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন নয়, ইউরোপ জুড়ে তলায় তলায় বেড়ে ওঠা খ্রিস্টান উগ্রবাদী সংগঠনগুলিও একইভাবে সংগ্রহ করে তাদের আত্মোৎসর্গে পিছপা না-হওয়া ক্যাডার। তুলনায় একটু পিছিয়ে থাকলেও একই কায়দা বজায় রাখে উগ্র হিন্দু সংগঠনগুলিও। কী সেই পদ্ধতি, যা দিয়ে মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া যায় তরুণতরদের?

• ধর্মীয় উগ্রবাদের ক্ষেত্রে সবার আগে ধর্মের এমন একটা ভার্সনকে খাড়া করা হয়, যা আদ্যন্ত বিকৃত। তার গোড়ায় সিঞ্চন করা হয় তীব্র জাতিবিদ্বেষ। আইসিস বা ওই ধরনের সংগঠন ক্রমাগত জানাতে থাকে ‘বিধর্মী’ জগৎ সম্পর্কে চরম বিকৃত তথ্য।

• তরুণদের ক্রমাগত বলা হতে থাকে, তারা যেন কিছুতেই অন্য কোনও বই না পড়, কোনও ‘বিদেশি’-র সঙ্গে মেলামেশা না করে। পিছিয়ে থাকা এলাকায় এটা করা সহজ। কিন্তু শহরাঞ্চলেও এই বিষয়ে মনিটরিং করে জঙ্গিরা। যাদের তারা সম্ভাব্য ক্যাডার হিসেবে বেচে নিয়েছে, তাদের পড়াশোনা, বিনোদন সবকিছুর উপরেই নজরদারি চলে।

• পাখিপড়ার মতো করে বোঝানো হতে থাকে, তারা কোনও না কোনও ভাবে বঞ্চিত। অথবা এমন একটা বক্তব্য খাড়া করা হয় যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে জঙ্গিপনাই একমাত্র উপায় একথা যেনতেন প্রকারেণ বোঝানো হতে থাকে।

• সমাজের অন্য মানুষ সম্পর্কে তীব্র ঘৃণার বীজ বপন করা হতে থাকে। এখানেও শাস্ত্রের অপব্যাখ্যা মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে অন্য সম্প্রদায় সম্পর্কে চরম অপপ্রচার চালানো হয়।

• ক্রমাগত গুজব রটানো হতে থাকে। বিশ্বের কোথায় তাদের সম্প্রদায় কতটা অত্যাচারিত বোঝানোর জন্য নির্যস মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয়। নকল ভিডিও তুলে দেখানো হতে থাকে তাদের সম্প্রদায়ের উপরে নির্যাতন, হত্যা ইত্যাদি।

• তরুণদের ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে কঠোর পরিস্থিতির সম্মুখীন করানো হয়। অনেক সময়ে তাদের উপরে শারীরিক, মানসিক নির্যাতনও করা হয়। বাধ্য করা হয় ঝাঁকে সামিল হতে।

• উত্তেজক মাদক ব্যবহার নৈমিত্তিক ব্যাপার। ক্রমাগত নেশার ওষুধ খাইয়ে তাদের স্বক্রীয় চিন্তার শক্তি লোপ করার চেষ্টা চলে। আক্রমণের সময়ে শারিরীক ভাবে প্রস্তুত থাকার সেই শক্তি অর্জন করতে শেখানো হয়।

• ক্রমাগত টাকার লোভ দেখানো হয়। এমনকী এটাও বলা হতে তাকে, মৃত্যুর পরেও তাদের পরিবারে বিপুল টাকার যোগান অব্যাহত থাকবে।

• সোশ্যাল নেটওয়ার্কে প্রচার তুঙ্গে রাখা হয়।

• ‘ডার্ক ওয়েবসাইট’গুলির অভিমুখ উন্মুক্ত রাখা হয়, যেখানে ক্রমাগত উত্তেজক ভিডিও বা বানানো খবর উপস্থাপিত হচ্ছে।-এবেলা

০৫ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এমএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে