শুক্রবার, ০৫ আগস্ট, ২০১৬, ০৮:৫২:১৩

চারজনের সংসার চালিয়ে পড়াশোনাও করছেন ১৪ বছরের এই মেয়ে!

চারজনের সংসার চালিয়ে পড়াশোনাও করছেন ১৪ বছরের এই মেয়ে!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ঘরে বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত। অবসাদে বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন মা। ব্যর্থ হলেও তার পর থেকে গভীর মানসিক অসুখে ভুগছেন। সংসারে আর আছে ১২ বছরের এক ছোট ভাই। নিজে ভেঙে না পড়ে, এই ভেঙে পড়া সংসারটাকেই ঠেলে সোজা করে রেখেছে ১৪ বছরের মেয়ে রচনা। টাকা আয় করে সংসার চালানোর পর, নিজের পড়াশোনাটাও কিন্তু সমানতালে করে যাচ্ছে ভারতের হায়দরাবাদের এই ছোট্ট মেয়েটি।

টাকার জন্য সকালে দোকান পরিষ্কারের কাজ। কাজ সেরে বাড়ি ফিরেই ভাইকে নিয়ে স্কুল। স্কুল থেকে ফিরে এক বাড়িতে বাসনমাজা। তার পর বিধ্বস্ত হয়ে বাড়ি ফিরেও নিজের পড়াশোনা নিয়ে বসাটা কিছুতেই ছাড়েনি রচনা। হায়দরাবাদের বাসিন্দা রচনা বারিগালোলু পড়ে ক্লাস এইটে। ১২ বছরের ভাইকেও পড়াশোনা করিয়ে বড় করার জেদ ছাড়েনি মেয়েটা।

কয়েক বছর আগেও অবশ্য অবস্থা এতটা করুণ ছিল না রচনাদের। পরিস্থিতি ঘুরে যায় বাবার অসুখের পর থেকেই। তিন বছর আগে তার বাবা ইদাগিরির ক্যান্সার ধরা পড়ে। রোগের কারণে এখন তিনি পুরোপুরি শয্যাশায়ী। চিকিৎসার খরচ সামলাতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। দেনায় ডুবে যায় পুরো পরিবার। দাদা বুঝতেই পারছিলেন বেশি দিন এভাবে চলা অসম্ভব। আত্মহত্যা করে বসেন তিনি। সমস্ত চাপ এসে পড়ে মা মারিয়ার উপর। লোকের বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে সংসারটা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু জীবনযুদ্ধে পরাজয় স্বীকার করতে তারো বেশি দিন সময় লাগেনি। হার মেনে নিয়ে তিন তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। দিন-রাত মুখ গুঁজে কাঁদতেন মারিয়া, ছেলেমেয়ে আর স্বামীর খাবার জোগাতে দিনের পর দিন নিজে না খেয়ে শুয়ে থাকতেন।

মায়ের এই দুর্দশা দেখে আর ঠিক থাকতে পারেনি রচনা। মায়ের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কীভাবে যে কী করবে বুঝে উঠতে পারছিল না সে। ঠিক করে মায়ের মতো সে-ও কাজ করবে। কিন্তু পড়াশোনা করারো তো আপ্রান ইচ্ছা! হাল ছাড়েনি। এক দর্জির দোকান পরিষ্কারের কাজটা প্রথমে পেয়ে যায় এক প্রতিবেশীর সাহায্যে। কিন্তু সংসার খরচ তাতে কুলোয় না। নিতে হয় আরো কাজ। এই ভাবেই চলছে রচনার দিন। তার এই উদ্যোগ দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরাও। আপাতত পড়াশোনাটা ফ্রি। জেদি রচনা নিজের পড়াশোনা করেই বড় হতে চায়। বড় করতে চায় ভাইকেও।-অানন্দবাজার
৫ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে