রবিবার, ০৭ আগস্ট, ২০১৬, ০৪:৫৮:৫৮

এক মায়ের করুণ কাহিনী!

এক মায়ের করুণ কাহিনী!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পেটের দায়ে মায়ের দেয়া সোনার চেন বেচতে চেয়েছিলেন তিনি। ডলার না পেলে দুই ছেলেমেয়েকে খাওয়াবেন কী ভাবে? কিন্তু সুযোগ পেয়েও, ঝকঝকে দুর্লভ, দুর্মূল্য সেই সোনার চেনটা নিতে চাইলেন না সোনার দোকানি!

যিনি বেচতে চেয়েছিলেন, তিনি বহু বার অনুরোধ করলেন। বোঝাতে চেষ্টা করলেন, তার সোনার চেনটা মোটেই মূল্যহীন নয়। বললেন, মোটামুটি কিছু পেলেই ওই দুর্মূল্য সোনার চেনটা তিনি দিয়ে দেবেন। দোকানি তাতেও রাজি হলো না! গল্প নয়, সত্যি। বিপদে-আপদে মার্কিনদের পাশে দাঁড়ান আমেরিকায় থাকা মুসলিমরা।

ডালাসের এক মার্কিন মহিলার কাহিনী। ঘরে ডলার নেই একটিও। কয়েক দিন খাওয়াতে পারেননি দুই সন্তানকে। তারা কান্নাকাটি করছিল। আর সহ্য করতে পারছিলেন না ওই মহিলা। ঘরে আর এমন কিছু ছিলও না, যা বেচে ছেলেমেয়েদের মুখে কিছু তুলে দেওয়ার জন্য কয়েকটা ডলার জোগাড় করা যায়! মহিলার হঠাৎই মনে পড়ে গেল আলমারির লকারে রাখা তার সোনার চেনটার কথা। দুর্লভ, দুর্মূল্য ওই সোনার চেনটা তাকে তার মা দিয়ে গিয়েছিলেন, মৃত্যুর আগে। তার ব্যবহারের জন্য।

মহিলার মনে পড়ে গেল, ওই দুর্মূল্য সোনার চেনটা ছাড়া তো তার হাতে লড়াই করার আর কোনো হাতিয়ার নেই! যে-ই ভাবা, সে-ই কাজ। আলমারি থেকে ভারী সোনার চেনটাকে বের করে নিয়ে দুই ছেলেমেয়ের হাত ধরে সোজা ছুটলেন সোনার দোকানে। দোকানিকে দেখালেন, তার দুর্মূল্য সোনার চেনটা। বললেন, বেচতে চান। কেন বেচতে চান, সেটাও বললেন। এও বললেন, কম ডলার পেলেও তিনি সেটা বেচে দেবেন।

সব শুনে মুখটা গোমড়া হয়ে গেল সোনার দোকানির। মহিলাকে বললেন, ‘কেন এটা বেচবেন, বলুন তো? আরো এক বার ভাবুন।’ কথাটা শুনে মুখ কালো হয়ে গেল মহিলার। হতাশ গলায় বললেন, ‘আমার যে আর কিচ্ছু করার নেই। আর একটা মাস চালানোরও ডলার নেই আমার হাতে। দুই ছেলেমেয়েকে খাওয়াতে পারছি না।’ তাতেও সন্তুষ্ট হলেন না সোনার দোকানি। জানতে চাইলেন, ‘চেনটা বেচার জন্য এটাই একমাত্র কারণ?’

এ বার আরো ভেঙে পড়লেন ওই মহিলা। চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন, ‘মৃত্যুর আগে আমার মা সোনার চেনটা আমাকে দিয়ে গিয়েছিলেন। এত দিন অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হলেও, ওটাকে আঁকড়ে রেখেছিলাম। আর পারছি না। ডলার না পেলে আমার সংসার যে আর চলবে না!’

না, তাতেও ‘বরফ’ গলল না! সোনার চেনটা ওই মহিলাকে ফেরত দিয়ে দিলেন দোকানি। সঙ্গে দিলেন ওই চেনটার যা দাম হয়, সেই পরিমাণ ডলারও! তার পর দোকানি বললেন, ‘এই যে বলছিলেন, ওটা (সোনার চেন) আপনার মা আপনাকে উপহার দিয়ে গিয়েছিলেন! কেউ মায়ের দেয়া উপহার কখনো বেচে? খুব দরকার যখন, তখন এই ডলারগুলো রাখুন।’

এ কথা বলে একটা কাগজে নিজের টেলিফোন নম্বরটাও লিখে দিলেন সোনার দোকানি। বললেন, ‘এই নম্বরটা রাখুন। আরো কিছু (ডলার) লাগলে, বলবেন।’ আর ওই মহিলার দুই ছেলেমেয়েকে বললেন, ‘তোমরাও মায়ের জন্য ভাবো।’

মধ্য জুলাইয়ের ওই ঘটনার পর আলাদা একটা ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছিল। ‘আমেরিকা ফর আরবস’। পেজটা দেখা হয়েছে ৯৫ লক্ষ বার, দু’সপ্তাহে। শেয়ারের সংখ্যা তিন লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে।-আনন্দবাজার
৭ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে