ফেনী: ফেনী শহরের সোনাগাজী উপজেলার খোন্দকার গ্রামে অনৈতিক প্রস্তাবে অস্বীকৃতি জানালে গত শুক্রবার দুই নারীকে পিটিয়ে প্রকাশ্যে গাছে বেঁধে নির্যাতন করে বখাটেরা। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দিয়েছে নির্যাতিত নারীরা।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত বেশ কিছু দিন ধরে চর খোন্দকার এলাকার বখাটে সুজন মাদকাসক্ত হয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়ির এক গৃহবধূকে দিনে-রাতে প্রায় সময় অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে গৃহবধূকে সুজন জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে গৃহবধূ ও তার শাশুড়ি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে সুজন এসে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। দরজার আওয়াজ শুনে গৃহবধূ ও তার শাশুড়ি ঘুম থেকে উঠে বখাটেকে চলে যেতে বলেন। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করলে তারা উভয়ে চিৎকার শুরু করলে সুজন পালিয়ে যায়।
পরেরদিন শুক্রবার সকালে গৃহবধূ ও তার শাশুড়ি বিষয়টি বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে সুজনের বিরুদ্ধে বিচার দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য শফি উল্যাহর কাছে যাওয়ার সময় কামালের দোকানের সামনে সড়কের ওপর সুজন ও তার শ্বশুর মো. ইয়াছিন দুই নারীর গতিরোধ করে বেদম পিটিয়ে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। স্থানীয় লোকজন তাদের বাঁধন খুলে দেয়। এসময় আশ-পাশের লোকজন নারীদের নির্যাতন ও অবমাননা কর ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন। পরে স্থানীয়রা দুই নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, স্থানীয় মো. সুজন (২৬), মো. ইয়াছিন (৪৫),আবদুল মান্নান (২৮),পারভিন আক্তার (২২), রনিকে (৪০) আসামী করে থানায় মামলা করা হয়। নারীদের ওপর নির্যাতন এবং ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
নির্যাতনের শিকার নারীরা জানান, সুজন ও ইয়াছিনের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্য শফি উল্যাহর সামনে তাদের ওপর এমন নির্যাতন চালানো হয়।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য শফি উল্যাহ বলেন, ঘটনার সময় তিনি পাশ্ববর্তী এক বাড়িতে সালিশী বৈঠকে ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি সালিশী বৈঠক থেকে ঘটনাস্থলে এসে উভয়পক্ষের বিবাধ মীমাংসা করার চেষ্টা করেন।