নিউজ ডেস্ক : অবশেষে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া ফেনীর সেই মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।
এদিকে নুসরাতের মৃত্যুর শোকে ফেনীর সোনাগাজী আজ স্তব্ধ। তার পোড়া লাশের অপেক্ষায় চোখের কোনে জল নিয়ে হাজারো গ্রামবাসী ও আত্মীয়-স্বজন।
এদিকে যৌন হয়রানির পর পুলিশের কাছে দেয়া নুসরাত জাহান রাফির একটা জবানবন্দি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করছেন রাফি।
জানা যায়, প্রথম বর্ষ থেকেই নুসরাতকে যৌন হয়রানি করতো অধ্যক্ষ। এমনকি পিওনকে দিয়ে রুমে ডেকে হাত ধরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। প্রায়ই ডেকে নিয়ে অশোভন কথা বলতেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
প্রথম বর্ষে ভর্তির কিছুদিন পরই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা যৌন হয়রানি করেন এমন উল্লেখ করে নুসরাত জবানবন্দিতে বলেন, মুখটা খুলো, আমি খুলি নাই, তিনি বললেন তোমাকে আমার ভালো লাগে, আমি বলললাম হুজুর আপনি এগুলো কি বলছেন আপনি আমার বাবার সমতুল্য।
এ সময় নুসরাত আরও বলেন অধ্যক্ষ তাকে বলেন, ‘তোকে কেউ বিশ্বাস করবে না, তোর লাইফে আগে একটা কলঙ্ক আছে তুই এখন আমার সাথে থাক।’
এদিকে নুসরাত কেঁদে কেঁদে জবানবন্দি দিলে পুলিশ বলে, কেঁদো না কাঁদলে আমি বুঝবো কি করে। বোকা মেয়ে তোমাকে বলতে হবে তো। কাঁদতেছো কেনো। এমন কিছু হয়নি যে তোমাকে এখনই কাঁদতে হবে।
তাছাড়া জবানবন্দিতে জানা যায়, পিওনের মাধ্যেমে রুমে ডাকতো। একদিন দুই বান্ধবীদের নিয়ে গেলেও তাদের ডুকতে দেয়নি, পিওন জানায় অধ্যক্ষ গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবে। এরপর রুমে গেলে হাত ধরে অধ্যক্ষ।
এদিকে সেই ভিডিও শেষে দেখা যায় পুলিশের কাছে কেঁদে কেঁদে নুসরাত বলে আমি আর বাঁচবো না স্যার।
এর আগে সর্বশেষ ২৭ মার্চ পিয়ন নুরে আলমকে দিয়ে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ নুসরাতের শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। প্রতিবাদী, অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেওয়া নুসরাত পরিবারকে জানায়।
এরপর পরিবারের সমর্থনে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেখানে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (প্রত্যাহার) মোয়াজ্জেম হোসেনকে এসব ঘটনার বর্ণনা দেন নুসরাত জাহান রাফি।