ফেনী : ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যা মামলায় মোহাম্মদ শামিমের পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির করে পিবিআই সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
শামিমকে ১৫ এপ্রিল তার সোনাগাজীর বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। মামলার বাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু জানান, এই শামীম হলো শামীম ২। এই মামলার জবানবন্দী দেওয়া তিন আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম, নূর উদ্দিন ও আবদুর রহিম শরীফ হত্যাকান্ডে এই শামীমের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
এই শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই মামলার অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। শামীম সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার পরীক্ষার্থী। সে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার ঘনিষ্ঠ সহচর। সে অধ্যক্ষের মুক্তি আন্দোলনের নেতা। অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে যে আন্দোলন ও মানববন্ধন হয়েছে তাতে শামীমের ভূমিকা ছিল।
হাফেজ কাদেরের জবানবন্দি : এদিকে নুসরাত হত্যার এজহারভুক্ত আসামি হাফেজ আবদুল কাদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিচ্ছেন। গতকাল তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালাতে হাজির করা হলে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। নুসরাত হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের একজন এই হাফেজ আবদুল কাদের। তিনি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক।
বুধবার পিবিআই ঢাকার মিরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আবদুল কাদের মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন, কারাগারে সাক্ষাৎকার করা এবং হত্যাকান্ডে র দুই দিন আগে ৪ এপ্রিল সকাল ও রাতে পৃথক সভায় উপস্থিত ছিলেন। ১২ সদস্যের উপস্থিতিতে নুসরাত হত্যার রূপরেখা নির্ধারণে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তার পরামর্শে হত্যাকান্ডে কে কোথায় থাকবে তা নির্ধারণ হয়। ৬ এপ্রিল আবদুল কাদেরের দায়িত্ব ছিল মাদ্রাসার গেট পাহারা দেওয়া।
এজাহারভুক্ত ৮ আসামি গ্রেফতার : আগুনে পুড়িয়ে নুসরাত জাহান রাফির হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে গতকাল বিকালে ফেনীর সোনাগাজীর ঘটনাস্থল ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা পরিদর্শনে যান পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি রুহুল আমিন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।