নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত দক্ষ শ্রমিকের পাশাপাশি অদক্ষ শ্রমিক যাচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সরকারিভাবে অনেকে এ সুযোগের আওতায় আসতে না পেরে দালালের মাধ্যমে শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে যাওয়া পর এসব শ্রমিকরা যেমন কোনো কাজ পাচ্ছেন না, তেমনি তাদের কারণে শ্রম বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বৈধ প্রবাসীরা।
তাই প্রবাসীদের ভিআইপি আইডি কার্ড প্রদান ও এয়ারপোর্টের হয়রানি সহ বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন তরুণ সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী। সম্প্রতি নানা বিষয় নিয়ে দেশের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল ‘সময়’কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ফরিদপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য।
সাক্ষাৎকারে নিক্সন চৌধুরী বলেন ‘আমার আসন হবে একটা মডেল আসন এবং সম্পূর্ণ মা'দকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করাই আমার মূল লক্ষ্য।’
নিক্সন চৌধুরীর সাক্ষাৎকারটি জন্যে হুবহু তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: আপনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দুই দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন এবং আপনার এলাকার মানুষ আপনাকে অত্যাধিক ভালোবাসে, এর রহস্য কি?
নিক্সন চৌধুরী: দেখুন, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব রয়েছে, আমি যদি মানুষের সেবাই না করতে পারি, তাহলে আমার ক্ষমতা দেখানোর জন্য এমপি হয়ে কোনো লাভ নাই। তাই আমি ক্ষমতার জন্য এমপি হইনি। এলাকার জনগণের সেবা করাই আমার মূল লক্ষ্য, তাদের বিপদে আমি যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতে পারি, তাহলে আমি কিসের জনপ্রতিনিধি?
প্রশ্ন: আপনি খুব অল্প সময়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন দেশে ও বিদেশে, পাশাপাশি আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীও রয়েছে অনেক ক্ষমতাধর, বিভিন্ন সময় হুমকির পরেও কোনো প্রটোকল ছাড়াই একাকী স্বাভাবিক চলাফেরা করেন, এটা কি নিরাপদ মনে করেন?
নিক্সন চৌধুরী: দেখুন, আমার প্রটোকল আমার জনগণ, মৃত্যুর ভয়ে পুলিশের প্রটোকল নিয়ে কেউ বাঁচতে পারেনি, আর আমার যারা প্রতিদ্বন্দ্বী, তারা সবাই আমার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সুতরাং আমি যদি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে না পারি, তাহলে বেঁচে থেকে লাভ কি? যতদিন বাঁচবো মানুষের জন্য কাজ করেই যাবো ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন: ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের হয়রানির বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?
নিক্সন চৌধুরী: ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সব সময় আমার লোক লাগানো আছে। যাদের কাজই হচ্ছে আমার আসনের কোনো রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিতে হাসপাতালে যেয়ে যেন হয়রানির শিকার না হয় এবং তাদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা করা। শুধুমাত্র ফরিদপুর নয়, ঢাকায়ও যদি আমার এলাকার কেউ আসে চিকিৎসা করাতে, তাহলেও আমি নিজের লোক দিয়ে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করি। আর দালালদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছি, কিছুদিন আগেও অনেক দালাল গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রশ্ন: মহান জাতীয় সংসদে আপনি প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন এবং দেশের অনেক টেলিভিশনের টকশোতেও বেশ গুরুত্বের সাথে প্রবাসীদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন, প্রবাসীদের নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি?
নিক্সন চৌধুরী: এক নাম্বারে সরকারের কাছে আমার দাবি, প্রবাসীদের ভিআইপি আইডি কার্ড করে দেওয়া হউক, এবং দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস, আদালতে প্রবাসীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের সেবা দেওয়া হউক। এয়ারপোর্টের হয়রানি অনেক কমেছে আগের চেয়ে। এরপরও আমি এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষকে বলবো, আমার একজন প্রবাসী যেন নিরাপত্তা তল্লাশির নামে হয়রানির শিকার না হয় সেইদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রবাসী কল্যাণ ডেক্স চালু করবো। প্রবাসীদের জন্য ট্রাভেল ট্যাক্স বন্ধ করার ব্যাপারে মহান সংসদে তুলে ধরবো। প্রবাসীদের বিনা হয়রানিতে এবং দ্রুত সময়ে ভোটার আইডি দেওয়ার ব্যাপারে কাজ করছি এবং আমার এলাকা থেকে কোনো একজন মানুষ যেন অদক্ষ হয়ে প্রবাসে না যায়। সেই জন্য একটা স্কিল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করবো, যেখান থেকে একজন মানুষ কাজের দক্ষতা অর্জন করে বিদেশ যেয়ে বেশি পরিমাণ রেমিটেন্স প্রেরণ করতে পারবে।
প্রশ্নকর্তা: অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য।
নিক্সন চৌধুরী: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার অফিসে কষ্ট করে এসে আমার সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য, সবশেষে আমি আপনার মাধ্যমে দেশ ও বিদেশের সকলের কাছে দোয়া চাই, যেন আমি সৎ ও সুন্দরভাবে আমার এলাকা পরিচালনা করতে পারি।-আমাদেরসময়.কম