এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় হাসি বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার ১৫ দিন এবং লাশ দাফনের পাঁচদিন পর জীবিত উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
হাসি বেগম সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের সদরপুরে গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন হাসি বেগম নামের এক গৃহবধূ। নিখোঁজ হওয়ার ১৫ দিন পর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলায় এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহটি হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করেন তার মা।
পরে ওই মরদেহ শৌলডুবী কবরস্থানে দাফন করে হাসি বেগমের পরিবার। দাফনের পাঁচদিন পর হাসি বেগমকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগমকে আটক করে সদরপুর নিয়ে আসেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বড় বাড়ির মৃত শাহ আলম শেখের ছেলে মোতালেব শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসি বেগমের। তাদের সাত বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে সদরপুর আসার উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনায় হাসির বাবা শেখ হাবিবুর রহমান গত ১১ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে উল্লেখ করা হয় তার মেয়ে হাসি বেগমকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে জামাতা মোতালেব শেখ (৪৫)। দু’দিন পর ১৪ সেপ্টেম্বর হাসির স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেন এবং অভিযোগে উল্লেখ করেন তার স্ত্রী হাসি বেগম নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছেন।
এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা এলাকায় কচুরিপানার ভেতর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম লাশের কোমরে একটি তাবিজ ও পায়ের একটি আঙুল ছোট থাকায় নিখোঁজ হাসি বেগমের লাশ হিসেবে শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া শেষে শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে দাফন করা হয়।
অপরদিকে, অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ চলা অবস্থায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম ফোন করে তার বাবা-মাকে জানায় সে জীবিত আছে। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সদরপুর থানা পুলিশ হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে জীবিত উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ বলেন, হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি থানায় আছেন। দু’টি এলাকার ঘটনা জড়িত থাকায় ঘটনাটি ভাঙ্গা ও সদরপুর থানা সমন্বয়ে তদন্ত চলছে।