এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ফরিদপুরের সদরপুরে মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে জনতার ভিড়ে বিপাকে পড়েন এক সংসদ সদস্য প্রার্থী। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তিনি কোনোমতে পালিয়ে বাঁচেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ওই ব্যক্তির নাম রায়হান জামিল। তিনি ফরিদপুর-৪ আসনের (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদরপুর উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১০ টাকায় ইলিশ বিতরণের আয়োজন করলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, প্রচারের অংশ হিসেবে তিনি মাত্র ১০ টাকায় একটি করে ইলিশ মাছ দেওয়ার ঘোষণা দেন। ঘোষণা শুনে সকাল থেকেই স্কুল মাঠে ভিড় করতে থাকেন শত শত মানুষ। তবে তিনি সঙ্গে আনেন মাত্র ৬০০টি ইলিশ। আর মাছ নিতে আসেন অন্তত ২ হাজার মানুষ। এতে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও মাছ পাননি। ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে রায়হান জামিল কোনোমতে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। পরে তিনি ভাষণচর ইউনিয়ন এলাকায় গেলে সেখানে ক্ষুব্ধ জনতা তার গাড়ি আটকায়। তবে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি সেখান থেকেও পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
স্থানীয় দিনমজুর মোসলেম শেখ বলেন, সকালে কিছু না খেয়ে মাছের আশায় লাইনে দাঁড়াইছিলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না। উল্টো ধাক্কাধাক্কিতে মাথায় চোট খাইছি।
একই অভিযোগ করে গৃহিণী সুমি আক্তার বলেন, ভেবেছিলাম ১০ টাকায় ইলিশ পেলে একদিন হলেও বাচ্চাদের মুখে দিতে পারবো। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরতে হলো।
কলেজছাত্র রাসেল মোল্লা বলেন, মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা না রাখা ঠিক না। গ্রামের শত শত মানুষ ভোর থেকে এসে দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু মাছ পেল অল্প কয়েকজন। এতে ক্ষোভ তো হবেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৬০০টি ইলিশ থাকলেও ভিড় ছিল কয়েক হাজার মানুষের। তাই সবাইকে মাছ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে রায়হান জামিল বলেন, ইলিশ এখন অনেক দামি। সাধারণ মানুষ খেতে পারে না। তাই আমি ১০ টাকায় মাছ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এত ভিড় হবে ভাবিনি। পরে সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ফিরে আসতে হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, আমি আগেই তাকে সতর্ক করেছিলাম। তিনি শোনেননি। পরে বিশৃঙ্খলা হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।