গাজীপুর : কারাগারে মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করতে বিপুল সংখ্যক স্বজনের উপস্থিতি, ফাঁসির নির্বাহী আদেশ কারাগারে পৌঁছে দেয়া, কড়াকড়ি নিরাপত্তা, পাশাপাশি ফাঁসির মঞ্চে তৃতীয় দফা ও শেষবারের মতো মহড়া সম্পন্ন করা- তাহলে কি আজ রাতেই জামায়াত নেতা মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে?
এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি কারাগার বা সরকারের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে। তবে এরই মধ্যে কাশিমপুর কারাগারের আশপাশ এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
মানবতাবিরোধী মামলায় এর আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করার এ ধরনের প্রস্তুতির বেশ মিল পাওয়া যাচ্ছে। মীর কাসেম আলীর ফাঁসির নির্বাহী আদেশ শনিবার বিকেল ৪-৫০ মিনিটে কাশিমপুর কারাগারে এসে পৌঁছে।
কারাগারের জেলার মো. নাশির আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গত বুধবারের পর আজ শনিবার আবারো কারাগারে সাক্ষাতের জন্য মীর কাসেম আলীর পরিবার সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয়।
কারাগারে যখন মীর কাসেম আলীর ফাঁসির নির্বাহী আদেশ পৌঁছে তখনো কারাভ্যন্তরে অবস্থান করছিলেন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা পরিবারের ৪৭ জন সদস্য। পরে তারা সাক্ষাতের অনুমতি পান।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আর কোনো আসামির ক্ষেত্রে শেষ পর্যায়ের সাক্ষাতের সময় এত বিপুল সংখ্যক পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে দেখা যায়নি।
শনিবার সকালে মীর কাসেম আলীর পরিবারকে সাক্ষাতের জন্য খবর দেয়ার পর থেকেই কারাগারের আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশেও নিরাপত্তা বেষ্টনী বসায় কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা পুলিশ। বিকেলে আরো অতিরিক্ত ৪ প্লাটুন বিজিবি কারাগারের চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে কাশিমপুরের দুটি কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শেষবারের মত জল্লাদদের মহড়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। যাদের দিয়ে মহড়া সম্পন্ন করা হয়েছে তারা হলেন জল্লাদ দীন ইসলাম, শাহজাহান ও শাহীন।
এ প্রসঙ্গে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, সরকারের আদেশ পেলে যেকোনো একটি মঞ্চে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানান, কারাগারের বাইরে ও এলাকাবাসীর নিরাপত্তা এবং গত তিনদিন ধরে কারাগারের সামনে কর্মরত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, যেকোনো মামলার বিচার শেষে রায় কার্যকর করার দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তায়। সে হিসেবে মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় কার্যকরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও নেবে সরকার।
৩ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম