গাজীপুর থেকে : রাজধানীর নিকটতম এলাকা ৩৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সর্ববৃহৎ গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোটের হাওয়া বইছে। প্রায় ৩০ লাখ মানুষের এই সিটিতে ভোটার সংখ্যা ১২ লাখ। অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর দুই পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে গাজীপুরকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করে বর্তমান সরকার।
এরপর গত সিটি নির্বাচনে ১৪ দল ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান নির্বাচনে অংশ নেন। তবে এবার দুই দলে মেয়র পদে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অনেকে। যার যার অবস্থান থেকে কৌশলে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইতিমধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে উভয় দলের মেয়র প্রার্থীরা বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব, জাতীয় দিবস, মৃত ব্যক্তির জানাজা, পাবলিক পরীক্ষা, বিয়ে, সুন্নতে খত্নাসহ সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানে নিজেদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে দোয়া ও দলীয় প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন। সিটি নির্বাচনের ফলাফল এই অঞ্চলের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে সিটি নির্বাচন এখন চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকারদলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টঙ্গী পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। এই দুই প্রার্থীই মনোনয়ন পেতে মরিয়া এবং মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের পাশাপাশি সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদুর রহমান কিরনও মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন।
তবে এলাকাবাসী মনে করেন, প্রচারণায় জাহাঙ্গীর আলম এগিয়ে থাকলেও সিটি করপোরেশন চালানোর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতায় এগিয়ে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই আজমত উল্লা মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। গত নির্বাচনে আজমত উল্লা পরাজিত হলেও এবার চিত্রটা একটু ভিন্ন হবে। কারণ, বর্তমান মেয়র মান্নানের নগর উন্নয়নে নেই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা, দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতা, সময়মতো নগরবাসী তাকে না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে আজমত উল্লাই এগিয়ে রয়েছেন ভোটারদের কাছে।
বিএনপি সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান ও জেলা বিএনপির সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ও কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সরকার। এ বিষয়ে ১৪ দলের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে সেই নির্বাচনে অংশ নেবে। সম্ভাব্য অপর মেয়র প্রার্থী আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, দীর্ঘদিন সিটি করপোরেশন এর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা কাজে লাগাতে চাই। মনোনয়ন চাইব। যদি দল মনোনয়ন দেয় তাহলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেব।
এ ব্যাপারে আজমত উল্লা খান বলেন, দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন সেই নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি আরও বলেন, আমি টঙ্গী পৌরসভায় ১৮ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। আমাকে যদি মানুষ না চাইত তা হলে প্রশ্নই আসে না এতদিন ক্ষমতায় থাকার।
এদিকে বিএনপি সমর্থিত সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন সরকার বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেয় সেই নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে আমি গতবার মনোনয়ন চাইলে নেত্রী এবার মনোনয়ন দেওয়ার আশ্বাস দেন। তাছাড়া মান্নান সাহেব শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমিই আগামী সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন পাব বলে আশাবাদী। মেয়র মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার, দল যদি আমাকে নির্বাচন করতে বলে তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নেব। -বিডি প্রতিদিন
এমটিনিউজ/এসএস