শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্, গাজীপুর: গাজীপুরে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে জড়িত এমন শতাধিক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২১ জন চিকিৎসক, ২৪ জন নার্স এবং অন্যরা সকলে স্বাস্থ্যকর্মী। এছাড়া দুইজন সংবাদকর্মীও আক্রা'ন্ত হয়েছেন করোনায়।
মহাখালীর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। এই হিসাব গত সোমবার পর্যন্ত। তবে গত দুই দিনের হালনাগাদ তথ্য এখনও জানাতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সর্বশেষ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক ও একজন সিনিয়র নার্সের আক্রা'ন্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আক্রা'ন্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী। এদের মধ্যে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আব্দুস সালামও রয়েছেন।
কাপাসিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা আক্রা'ন্ত হওয়ার কারণ রোগীদের তথ্য গোপন করা। কাপাসিয়ার দস্যুনারায়নপুর এলাকা ছোঁয়া এগ্রো লিমিটেডের কিছু সংখ্যক শ্রমিক তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নিয়ে এই আক্রা'ন্তের সংখ্যা বাড়িয়েছে।
গাজীপুর সিভিল সার্জন খায়রুজ্জামান জানান, প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে নমুনা ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হচ্ছে।
সূত্র জানায়, গত দুইদিন ধরে গাজীপুরে আক্রা'ন্তদের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। গত সোমবার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৯১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রা'ন্ত ৪৬ স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে ল্যাব টেকনিশিয়ান, ফিল্ড অফিসার, ওয়ার্ড বয়সহ স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা–কর্মচারী আছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রা'ন্ত চিকিৎসকদের মধ্যে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন, কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালের ১২ জন এবং কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৭ জন আছেন।
নার্সদের মধ্যে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাতজন, কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাতজন, কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালের আটজন আছেন। ৪৬ স্বাস্থ্যকর্মী জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত।
শহীদ তাজদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, তিনি গাজীপুরের গ্রীন হাসপাতাল কাজ করেন। গত ১৪ এপ্রিল ওই হাসপাতালে অ'স্ত্রোপচার করার সময় এক চিকিৎসক হাঁচি ও কাশি দিতে থাকলে তাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে দেন সহকর্মী। পরে ১৮ এপ্রিল তিনি পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠান। ২০ এপ্রিল জানতে পারেন, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রা'ন্ত।
আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গাজীপুর জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রা'ন্ত ব্যক্তি শ'নাক্ত হয়েছে ২৬৯ জন।-বিডি প্রতিদিন