গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান সময়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় আবারো দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন এক প্রাইভেটকারের ৫ আরোহী। টঙ্গীর কলেজ গেট এলাকায় নির্মাণাধীন উড়াল সড়কের ওপর থেকে মোটা রড এসে একটি চলন্ত প্রাইভেটকারের উপর পড়ে।
এতে প্রাইভেটকারের ডালার কাঁচ ভেঙ্গে রডের একটি মাথা কারের ভেতরে ঢুকে যায়, এ সময় ভেঙ্গে যায় গাড়ির পেছনের লাইটও। এতে অল্পের জন্যে প্রাণে রক্ষা পায় ওই প্রাইভেটকারের ৫ আরোহী।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গীর কলেজ গেট এলাকায়। ওই প্রাইভেটকারটি ছিল গাজীপুর মহানগরীর ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবদুর রশিদের। গাড়িতে তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা, দুই ছেলে রুমান হোসেন ও মো. রাফি এবং চালক সোহাগ মিয়া।
গাজীপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রশিদ জানান, সপরিবারে ঢাকার মিরপুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় তারা বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে তারা গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার মালেকের বাড়ির বাসায় ফিরছিলেন।
বিকাল ৩টার দিকে টঙ্গীর কলেজ গেট এলাকায় পৌঁছলে নির্মাণাধীন বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সড়ক থেকে ২০-২৫ ফুট লম্বা একটি মোটা রড প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এতে ডান পাশের পেছনের ডালার কাঁচ ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। রডের মাথা গাড়িতে ঢুকে গিয়ে গাড়ি থেমে যায়। এ সময় গাড়ির পেছনের লাইট ভেঙ্গে যায়। অল্পের জন্য তারা প্রাণে বেঁচে গেছেন।
ঘটনার পর লোকজন জড়ো হন। খবর পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন উপস্থিত হয়ে দুঃখ প্রকাশ করে। বিআরটির কর্মকর্তারা বিষয়টি কাউকে না প্রকাশ করার অনুরোধ করেন। গাড়িটি মেরামত করতে তাকে ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্ষমা চায়। কিন্তু গাড়িটি সারাতে তার আরও অনেক বেশি টাকা লাগবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মাত্র এক সপ্তাহ আগে ঢাকার উত্তরায় বিআরটির গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারের ৫ যাত্রী নিহত হয়েছিলেন। তারপরও বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি প্রশাসনের কারো। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই তারা এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো সড়কে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যে কোনো সময় আবার বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি কর্তৃপক্ষের নিকট পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী ব্যতীত কাজ না করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে রোববার রাতে বিআরটি এর পিডি এএসএম ইলিয়াস শাহের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এর আগে ওই দিন সকালে গাজীপুরে বিআরটির চলমান কাজ পরিদর্শন করেন সেতু মন্ত্রণালয়ের মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী এবং সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন। পরিদর্শনকালে তারা ‘কয়েকটি স্থানে নির্মাণ কাজের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে’ জানিয়ে বিআরটি কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন। কিন্তু বিআরটি কর্তৃপক্ষ বিষয় গুরুত্ব না দেওয়ায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সূত্র: যুগান্তর