ফয়সাল হাবিব সানি, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: স্নিগ্ধ শীতের সকালে, পড়ন্ত দুপুরে কিংবা আবছায়া গোধূলির ফুরফুর মেজাজে পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। শুধু এক প্রকার নয়, হরেক রকমের পিঠার আয়োজন যদি হয়ে থাকে কোনো স্টলে! হ্যাঁ, বলছিলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বাংলা বিভাগের জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাংলা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত পিঠা উৎসবের কথা। ২০১৩ইং সালের এই দিনেই বশেমুরবিপ্রবিতে যাত্রা শুরু হয় বাংলা বিভাগের। বর্তমানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবস গুরুত্ব সহকারে পালনের মধ্য দিয়ে এবং বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্যকে নবরূপে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে বশেমুরবিপ্রবি'র বাংলা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিভাগের মডেলরূপে কাজ করছে।
মঙ্গলবার বশেমুরপ্রবি'র বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বর্ণিল পিঠা উৎসবের। হরেক রকমের পিঠার সমাগমে পিঠার উৎসবে মেতে উঠেছিলো পুরো বশেমুরবিপ্রবি। মঙ্গলবার সকাল ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন পিঠা উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন। উৎসবকে কেন্দ্র করে এসময় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেখ হাসিনা চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শেখ হাসিনা চত্বরে এসে শেষ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা চত্বরের চারটি স্টলে মনোমুগ্ধকর পরিবশে হরেক রকমের পিঠা পরিবেশনের আয়োজন করা হয়। চারটি স্টল ছিলো যথাক্রমে বশেমুরবিপ্রবি'র বাংলা বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের। রাত জেগে পিঠা বানিয়ে মানুষের সামনে তা পরিবেশনের যে কি আনন্দ তা এখানকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেই বুঝতে পারা যায়। পিঠা উৎসবের বাঁধভাঙা আনন্দে ভাসছে পুরো বশেমুরবিপ্রবি পরিবার।
বশেমুরবিপ্রবি'র বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মাধবী রায় জানান, ``নিজ হাতে পিঠা বানিয়ে তা মানুষের সামনে পরিবেশন করা যে কি অানন্দের তা ভাষায় বলে প্রকাশ করতে পারব না। বাংলার লোক ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে পিঠা উৎসব। অার এই পিঠা উৎসবে নিজেকে শরীক করতে পেরে নিজেকে বাংলা বিভাগের একজন গর্বিত শিক্ষার্থী হিসাবে দাবি করতে অাজ কেমন যেনো এক গর্ববোধ হচ্ছে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শ্রদ্ধেয় সভাপতি মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, ``পিঠা উৎসব আবহমান কাল ধরে বাঙালির নিজস্ব ঐতিহ্য বহন করে আসছে। বশেমুরবিপ্রবির বাংলা বিভাগও চায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বাংলাদেশের অতীত ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিতে। আর এরই ধারাবাহিকতায় আমরা এই বছর পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি।" বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তাদের ৪টি স্টলে প্রায় ৭০ প্রকারের পিঠার সমাবেশ রয়েছে। চিতুই পিঠা, ভাপা পিঠা, কুলি পিঠা, নকশি পিঠা, সুজির পিঠা, পাকান পিঠা, ডিমের পুডিং, মোয়া পিঠা, পাটিসাপটা, ছোলার বর্ফি, ঝাল চন্দ্রকোনা, চন্দনকুলি, গোলাপ পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, তক্তি পিঠা, দুধ খেঁজুর, পাঁপড়ি পিঠা, নারকেলের চিড়া, নারকেলের বর্ফি, রসপান পিঠাসহ হরেক রকমের রসালো পিঠার আয়োজনে মাতাল হয়েছিলো গোটা বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাস।
উল্লেখ্য, এই পিঠা উৎসব চলেছে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু করে রাত ৮টা অবধি। বাংলা বিভাগের পিঠা উৎসবে মুগ্ধ ও উৎসাহিত হয়ে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও চায় বাংলা বিভাগের মতো এখন থেকে তাদের বিভাগেও যেনো পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
০২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস