গোপালগঞ্জ থেকে : ওদের জন্মদাত্রী মা নেই। তাই ঈদ হোক বা কোনো উৎসবে মায়ের আদর-স্নেহ পাওয়া হয় না। সরকারি শিশু পরিবারে বেড়ে উঠছে। তাই সমাজের আর দশটা শিশুর থেকে আলাদা ওদের জীবন।
কিন্তু বিজয় দিবসে ভালো খাবার ও মায়ের মমতা পেয়ে যেন অন্যরকম একটি দিন কাটিয়েছে এসব অনাথ শিশু। মায়ের মমতায় নিজ হাতে ওদের পাতে খাবার তুলে দিলেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এতে মা না থাকার দুঃখ কিছু সময়ের জন্য হলেও ভুলে যায় এতিম শিশুরা।
জানা গেছে, গোপালগঞ্জ শহরতলীর ঘোষেরচর গ্রামে রয়ছে সরকারি শিশু পরিবার। এ পরিবারে স্বজনবিহীন ৭৬জন শিশু বেড়ে উঠছে। পড়ালেখার পাশাপাশ খেলাধূলার সুযোগও পাচ্ছে তারা। তারপরও মা আর স্বজন না থাকার বেদনা ওদের সব সময় ঘিরে রাখে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শিশু পরিবারের এসব অনাথ শিশুদের মাঝে ভালো খাবর বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা অনাথ শিশুদের মায়ের মমতায় নিয়ে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করেন। থালে থালে বেড়ে দেন পোলাও, মাংস। নেন তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর।
এতিম শিশুদের মাঝে জেলা প্রশাসকের খাবার পরিবেশনের একটি ছবি ফেসবুকে ভা'ইরা'ল হয়েছে। এমনভাবে শিশুদের ভালোবাসার জন্য জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানাকে প্রসংশায় ভাসিয়েছেন অনেকেই।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সমীর কুমার মল্লিক বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শিশু পরিবারের শিশুদের মাঝে মাংস, পোলাও, দই, মিষ্টি ও পানীয়সহ বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হয়। জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা নিজ হাতে তাদের মাঝে খাবার পরিবেশন করেন। এতে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও মায়ের অভাব পূরণ হয়েছে। এসব শিশু পড়ালেখা, খেলাধূলাসহ সব রকমের সহযোগিতা পেয়ে বেড়ে উঠছে।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, সরকার এসব শিশুর জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছে। তাদের খাবারের সময় গিয়েছিলাম। এই শিশুদের একটু খোঁজ খবর নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, এটা শুধু সরকার বা জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব নয়। সবাবই যেন এগিয়ে আসে। বিত্তবানরা যদি তাদের সন্তানদের জন্মদিন এসব বাচ্চাদের নিয়ে পালন করে, তাতে ওদের অনেক ভালো লাগে। আমি চাই সমাজের সবাই সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুর পাশে দাঁড়াক।