বিদায় হজের ভাষণে নারীদের উদ্দেশ্যে মহানবী (সা.) যা বলেছিলেন
ইসলাম ডেস্ক: বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষণে অন্যান্য গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে রাসুল সা. একথাও বলেছেন, ‘জেনে রাখো, নারীদের ব্যাপারে আমার অসিয়ত গ্রহণ করো। ওদের সর্বপ্রকার কল্যাণ করো। তারা তোমাদের নিকট শুধু অবস্থান করবে এছাড়া তাদের আর কিছুর তোমরা মালিক নও। তবে হ্যাঁ, তারা যদি প্রকাশ্যে অপকর্মে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের বিছানা পৃথক করে দাও। সামান্য প্রহার করো, যাতে শরীরের চামড়া না ফাটে। তাতে যদি তারা আনুগত্য স্বীকার করে নেয় তাহলে আর বাড়াবাড়ি করো না। ছিদ্রান্বেষণ করো না। ভালোভাবে জেনে রাখো, স্ত্রীদের ওপর তোমাদের যেমন হক রয়েছে, স্ত্রীদেরও রয়েছে তোমাদের ওপর হক। স্ত্রীদের ওপর তোমাদের হক হলো তোমাদের অপছন্দের কাউকে তোমাদের বিছানায় বসতে দিবে না, তোমাদের বাড়িতে ঢুকতে দিবে না। তোমাদের ওপর তাদের হক হলো, যথাসাধ্য তাদের উত্তম ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। [তিরমিযী]
পবিত্র কুরআনে প্রহারের যে অনুমতি দেয়া হয়েছে হাদিসের ব্যাখ্যা দ্বারা বোঝা যায় তা শুধু অশস্নীল অপকর্মের বেলায় প্রযোজ্য। বিদায় হজ্বের ভাষণে রাসুল সা. দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে এমন এক সারগর্ভ ও তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশনা দান করেছেন ইতিহাসে যার কোনো তুলনা নেই। ভেবে দেখুন, ‘দাম্পত্য জীবনে শামিত্ম শৃঙ্খলা ও সংহতি সৃষ্টির লক্ষক্ষ্য রাসুল সা. কী নির্দেশনা দিয়েছেন।’
প্রথমত: নারীর ওপর পুরম্নষের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। উভয়ে যদি সমমর্যাদা ও সমক্ষমতার অধিকারী হতো তাহলে দাম্পত্য জীবনে নির্ঘত বিশৃঙ্খলা দেখা দিতো। দুই বাদশা যেমন এক অঞ্চল শাসন করতে পারে না, তেমনি তারাও সারাক্ষণ খিটমিট লেগেই থাকতো।
দ্বিতীয়ত: স্ত্রী প্রকাশ্যে অপকর্ম করলে কী করতে হবে সে ব্যাপারেও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন—প্রথমে বোঝাবে, পরে শয্যাত্যাগ করবে; পরে হালকা প্রহার করবে।
তৃতীয়ত: প্রত্যেকের দায়িত্ব কর্তব্য ও অধিকারের কথা বলেছেন। পুরম্নষকে বলেছেন রীতিমত স্ত্রীর খোরপোশ দিতে। পরিবারের কর্তা হয়েছে বলে যাচ্ছে তাই করে যাবে ভেবে যেনো ধোঁকা না খায়। বরং স্ত্রীর স্বাভাবিক জরম্নরত ও চাহিদার প্রতিও খেয়াল রাখে। খানাপিনা ও পোশাক-আশাকে তাদের পছন্দ অপছন্দের প্রতি লক্ষ্য রাখে। কেননা তারা স্বামীর ওপর নির্ভরশীল। জগতের নিয়ম হলো, জীবনের কোনো অঙ্গনে কেউ কারো ওপর নির্ভরশীল হলে কর্তার উচিত অধিনস্থের রম্নচিপ্রবণতা ও পছন্দ অপছন্দের প্রতি সবিশেষ লক্ষ্য রাখা। অন্যথায় সে কষ্ট পাবে। তার কোমল হৃদয়ে আঘাত লাগবে।
জাহেলী আরবের রীতি ছিলো গাইরে মাহরাম নারীপুরম্নষ অবাধ মেলামেশা, ওঠাবসা, কথাবার্তা বললে কেউ কিছু মনে করতো না; আজকালের ইউরোপের নতুন জাহেলিয়াতের মত। আলোচ্য হাদিসে ‘স্বামীর অপছন্দের কাউকে বিছানায় বসতে না দেয়ার’ দ্বারা সেদিকে ইঙ্গিত যে, মহিলারা সেই জাহেলী প্রথা মিটিয়ে দিবে। এর দ্বারা যিনা ব্যভিচার উদ্দেশ্য নয়, কেননা সেটা তো সর্বোতই হারাম। ‘ঠিক নয়’ বলার কোনো কারণ নেই। স্ত্রীর দ্বিতীয় দায়িত্ব হলো, মাহরাম গাইরে মাহরাম যে কাউকে বাসায় আসতে দেয়ার পূর্বে স্বামীর অনুমতি নেয়া। স্বামীর অনুমতি ছাড়া কাউকে আসতে না দেয়া।-প্রিয় নিউজ
২৩ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ/ রাসেল/মাহমুদ
�