বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯, ০৭:৩৯:৪৯

বদলে গেল দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর নাম

বদলে গেল দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর নাম

রাজবাড়ী থেকে : দেশের সর্ববৃহৎ পতিতাপল্লী রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ৫নং ওয়ার্ডে। যেটি দৌলতদিয়া পতিতাপল্লী বা যৌনপল্লী নামে অত্যধিক পরিচিত।

পতিতাপল্লীর বাসিন্দারা মনে করেন, যৌনকর্ম একটি পেশা এবং এখানকার নারীরা এই পেশা ছেড়ে অন্য কিছু করতে চান না। এখানকার নারীরা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন।

কারণ যৌনকর্মী হলেও তারা মানুষ। পতিতা কিংবা যৌনকর্মী হিসেবে এই পল্লীর বাসিন্দারা পরিচয় দিতে নারাজ। তবে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে গ্রামের ঠিকানার স্থানে উত্তর দৌলতদিয়া পতিতালয় উল্লেখ করা হয়।

তাই দীর্ঘদিন ধরে এই নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। অবশেষে পল্লীর বাসিন্দাদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৫ জুলাই দৌলতদিয়া পতিতালয়ের নাম পরিবর্তন করে দৌলতদিয়া বাজার পূর্বপাড়া নামকরণ করেছেন নির্বাচন কমিশন। 

দীর্ঘদিন পর হলেও পতিতালয়ের নতুন নামকরণ হওয়ায় খুশি এই পল্লীর বাসিন্দারা। জানা যায়, দৌলতদিয়া পতিতালয়ে সব মিলে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বাসিন্দা রয়েছে। যার মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন ১ হাজার ৩০৮ জন। 

গ্রামের নামের কারণে সন্তানকে ভালো স্কুল বা ভালো কোনো পরিবেশে দিতে পারতেন না এখানের বাসিন্দারা। নানাভাবে বিড়ম্বনার শিকার হতেন অভিভাবকরা। এখন পল্লীর নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে তাদের আর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।

দীর্ঘদিন ধরে দেশের সর্ববৃহৎ যৌনপল্লী দৌলতদিয়া পতিতালয়ের বাসিন্দাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানায় গ্রামের নামের স্থানে ‘দৌলতদিয়া পতিতালয়’ নাম ব্যবহার করতে হয়েছে। অবশেষে ৪৭ বছর পর সেই কলঙ্ক মুছে সামাজিক স্বীকৃতি পেল তারা।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ০০৭২ কোডের ভোটার এলাকার নাম পরিবর্তন বিষয়ক একটি চিঠি পেয়েছি আমরা। 

সেখানে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ভোটার কোড ০০৭২ অপরিবর্তিত রেখে ‘পতিতালয়ের’ (উত্তর দৌলতদিয়া) স্থলে ‘দৌলতদিয়া বাজার পূর্বপাড়া’ নামকরণ করা হয়েছে। এখন থেকে এ নাম ব্যবহার হবে।

পতিতালয়ের বাসিন্দারা জানান, তারা কেউ পতিতা হয়ে জন্ম নেননি। ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার হয়ে এখানে এসেছেন। কিন্তু গ্রামের নামের কারণে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হন তারা।

গ্রামের নামের কারণে সন্তানদের ভালো কোনো স্কুলে বা অনুষ্ঠানে পাঠাতে পারেন না তারা। এখন গ্রামের নাম পরিবর্তন হওয়ায় তারা অনেক খুশি। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে