রবিবার, ০৮ জানুয়ারী, ২০১৭, ১২:২৬:৫২

আলহামদুলিল্লাহ, জার্মানিতে ইসলামের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে

আলহামদুলিল্লাহ, জার্মানিতে ইসলামের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে

আল আমিন আশরাফি: ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি বহু ধর্মের মানুষের একটি দেশ। সেখানে রয়েছে প্রটেস্ট্যান্ট ৩৪ শতাংশ, রোমান ক্যাথলিক ৩৪ শতাংশ, মুসলিম ৩.৭ শতাংশ এবং অন্যান্য ২৮.৩ শতাংশ।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফ্রান্সের পর এখানে সর্বাধিক মুসলিম বসবাস করে বলে জানা যায়। ১৮ শতকে ওসমানি সালতানাতের সঙ্গে জার্মানির কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার সূত্র ধরেই জার্মানিতে মুসলিমদের আগমন ঘটে। জার্মানির ঐতিহাসিক লাল মসজিদ নির্মিত হয় ১৭৮৯-৯১ খ্রিস্টাব্দে। এ থেকে অনুমান করা যায়, ওই সময় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসলিম জার্মানিতে বসবাস করত।

এক আদমশুমারির রিপোর্ট মতে, প্রায় ছয় লাখ আট হাজার মুসলিম বর্তমানে জার্মানির নাগরিক, যাদের প্রায়ই বার্লিন, কোলন, ফ্রাংকফুর্ট, স্টুটগার্ট এলাকার বাসিন্দা। এখানে প্রায় দেড় হাজার মুসলিম ইবাদতখানা আছে, যার মধ্যে সব মিলিয়ে ১৪০টি মসজিদ রয়েছে স্বাভাবিক গম্বুজ ও মিনারসংবলিত।

তবে ‘জার্মানি ইসলামের জন্য অনুকূল দেশ নয়’ বলে এত দিন সমালোচিত হয়ে আসছে। সমাজবিজ্ঞানী পোলাকের ভাষায়, ‘মুসলিমদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় জার্মানিতে বেশ কম। সাবেক পশ্চিম জার্মানির ৩৪ শতাংশ ও পূর্ব জার্মানির মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ মুসলিমদের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন বলে জানিয়েছেন। অন্য ধর্মের অনুসারীদের প্রতি জার্মানদের মনোভাব তুলনামূলকভাবে বেশি ইতিবাচক। ’

‘ইসলাম জার্মানির অংশ’—এই মন্তব্য করে সাবেক জার্মানির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ তুমুল বিতর্কের সূত্রপাত করেছিলেন।

সম্প্রতি জার্মানিতে ইসলাম ধর্মের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। জার্মানির কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি ওয়ার্নার ক্লাউন ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এ ধর্ম গ্রহণ করেছেন। একসময় তিনি ছিলেন কট্টর অভিবাসনবিরোধী। এখন তিনিই সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসীদের বড় ধরনের সমর্থক ও অভিভাবক। (ওয়ার্ল্ড বুলেটিন)

জার্মানির হানোফার শহরে রয়েছে একটি বিশাল কারাগার। সম্প্রতি ওই কারাগারে মুসলিম বন্দিদের জন্য একটি নামাজখানা নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে জার্মানির কোনো কারাগারে নামাজের জন্য আলাদা স্থান ছিল না। নবনির্মিত এই নামাজখানাটি প্রায় ৬০ বর্গমিটার। সেখানে একসঙ্গে ৫০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।

১১ মে ২০১৬ জার্মানির বাডেন উটেমবার্গ (Baden Wurttemberg) প্রদেশে পার্লামেন্ট স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তুর্কি বংশোদ্ভূত মুহতেরেম আরাস। তিনিই জার্মানির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম স্পিকার। গ্রিন পার্টির সদস্য আরাস জার্মানির জনপ্রিয় একটি অভিবাসনবিরোধী ডানপন্থী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানিকে (AFD) হটিয়ে স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন।

এসব ঘটনা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, জার্মানিতে ইসলামের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।

লেখক : ইতিহাস গবেষক।-কালের কন্ঠ
৮ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে