সোমবার, ০২ নভেম্বর, ২০১৫, ০৫:১৪:৫৪

নামাজ না পড়ার শাস্তি

নামাজ না পড়ার শাস্তি

ইসলাম ডেস্ক: মুসলমানদের জন্য নামাজ হলো ফরজ ইবাদাত। মুলত সে কারণেই আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা প্রতিদিন নির্ধারিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরনের অতিরিক্ত আমল করে থাকেন। আবার অনেকেই আছেন যারা মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ মোতাবেক সব কাজ করেন না। মুলত ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ আমল হচ্ছে নামাজ। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার ওপর নামাজ ফরজ। ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দেয়া শিরকের পর সবচেয়ে বড় গোনাহ। এমনকি এটি মানুষ হত্যা, অন্যের সম্পদ লুণ্ঠন, ব্যভিচার, চুরি ও মদপানের চেয়েও মারাত্মক গোনাহ। যার শাস্তি দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই ভোগ করতে হবে (কিতাবুস সালাত, ইবনে কায়য়ুম, পৃ. ১৬)। রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘যে কেউ ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দেয় আল্লাহ পাক তার হতে তাঁর জিম্মাদায়িত্ব উঠিয়ে নেন’ (বুখারি-১৮, ইবনে মাজাহ-৪০৩৪, মুসনাদে আহমদ-২৭৩৬৪)। অর্থাৎ যে নামাজ ছেড়ে দিলো সে যেন আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ছেদ করল। কেউ অস্বীকারপূর্বক নামাজ ছেড়ে দিলে তার ঈমান না থাকার ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু যে নামাজ অস্বীকার করে না অথচ যে কোনো কারণেই তা ছেড়ে দেয়। এ শ্রেণীর লোকের ব্যাপারে হুকুম নিম্নরূপ : ইমাম আহমদের মতে, প্রকাশ্যে শিরক করা ব্যতীত কেউ ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দিলেও সে ইসলাম থেকে খারিজ হবে না (তবাকাতুল হাম্বল, খ. ১ পৃ. ৩৪৩)। ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওহহাব (র:) বলেন, ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দিলে কারো ঈমান থাকে না। কারণ মহান আল্লাহ বলেন, যদি তোমরা সীমালঙ্ঘন করার পর তওবা করো, নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত দান করো তবেই তোমরা দ্বীনের মধ্যে শামিল বলে গণ্য হবে (সূরা তাওবা : ১১)। আলোচ্য আয়াতে মু’মিন হওয়ার জন্য নামাজকে শর্ত করা হয়েছে। সাহাবিরা নামাজ ছাড়া অন্য কোনো ফরজ তরককারীকে কাফির মনে করতেন না (তিরমিজি, হাকিম)। সাহাবিদের মধ্যে হজরত ওমর, ইবনে মাসউদ, ইবনে আব্বাস, মুরাজ, জাবের, আবু দারদা রা: এবং ইমামদের মধ্যে ইমাম ইসহাক, ইবনে মোবারক, হাকিম, ইবনে উতাইবা ও আবু বকর ইবনে আবু শায়বা র: মনে করেন, ইচ্ছাকৃত কেউ নামাজ ছেড়ে দিলে সে ঈমানের ওপর থাকে না। ইমাম আবু হানিফা র: সহ অনেক ইমামের মতে, নামাজ তরককারী কাফের নয়, ফাসেক বলে গণ্য হবে। কারণ রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মনে প্রাণে বিশ্বাস করবে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই সে জানাতে প্রবেশ করবে’ (বুখারি-৫৪০১)। তবে তাকে প্রথমে বহুকাল যাবৎ জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে হবে। ফাসেক ও কাফেরের মধ্যে পার্থক্য হলো কাফের চিরস্থায়ী জাহান্নামি এবং ফাসেক ক্ষণস্থায়ী জাহান্নামি। তাহলে বোঝা গেল নামাজ আদায় না করলে চিরস্থায়ী না হলেও জাহান্নামের শাস্তি অবধারিত। বেনামাজি জাহান্নামের ফেরেশতারা জাহান্নামে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলবে, আমরা বেনামাজি ছিলাম (সূরা মুদ্দাসির-৪৩)। ২রা, নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে