রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৫, ০৭:৫৩:৪৬

সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলত

সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলত

ইসলাম ডেস্ক: পবিত্র কোরআনের ১৮ নম্বর সূরা কাহাফ। মক্কায় অবতীর্ণ এ সূরা সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তাওরাত ও ইনজিলের আলেমরা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়ত সম্পর্কে কী বলে তা জানার জন্য মক্কার লোকেরা দু’জন লোককে মদিনার ইহুদিদের কাছে পাঠালো। ইহুদি আলেমরা তাদের বললো, আপনারা আপনাদের নবীকে তিনটি প্রশ্ন করবেন। যদি এই প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারেন তাহলে তিনি সত্য নবী, আর উত্তর দিতে না পারলে তার নবুওয়ত সঠিক নয়— ১. এক যুগে কিছু যুবক শিরক থেকে মুক্তিলাভে জন্মভূমি ত্যাগ করে একটি পাহাড়ের গুহায় লুকিয়ে ছিল, তাদের ঘটনা বলুন। ২. ওই ব্যক্তির কথা বলুন যিনি পূর্ব ও পশ্চিম পৃথিবী ভ্রমণ করেছিলেন। ৩. রুহের স্বরূপ কী? এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমোক্ত দুই প্রশ্নের উত্তরে এ সূরাটি নাজিল হয়েছে। এতে গুহায় আত্মগোপনকারী যুবকদের ঘটনা সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে। তাদেরই আসহাবে কাহাফ বলে। কাহাফ অর্থ গুহা। আসহাবে কাহাফ মানে গুহাবাসী। এ গুহা নামেই সূরাকে সূরা কাহাফ বলা হয়। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে যুলকারনাইনের কথা বলা হয়েছে। আর তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর সূরা বনি ইসরাইলের ৮৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। এ সূরায় হজরত মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনাও বর্ণিত হয়েছে। উল্লিখিত তিনটি ঘটনা এ সূরার কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয়। বিভিন্ন হাদিসে সূরা কাহাফের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। বিশেষত জুমার দিন এ সূরা তেলাওয়াতের অনেক ফজিলত রয়েছে। নিচে কিছু সহিহ হাদিস উল্লেখ করা হলো— আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়বে তার জন্য এক জুমা থেকে আরেক জুমা পর্যন্ত আলো বিচ্ছুরিত হবে। ( মুসতাদারেক হাকিম: ২/৩৯৯, বায়হাকী: ৩/২৪৯, ফয়জুল ক্বাদীর: ৬/১৯৮) হযরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দিবে এবং বিগত জুমা থেকে এ জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (আত তারগীব ওয়া তারহীব: ১/২৯৮) আবু দারদা (রা.) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সুরায়ে কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফেৎনা হতে রক্ষা পাবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৪২, মুসনাদু আহমদ, হাদিস: ২০৭২০, আবু দাউদ, হাদিস: ৩৭৬৫) হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবি মারিয়াম (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদিন পায়ে হেঁটে জুমার জন্য যাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার সাথে আবায়া ইবনে রিফায়া (র.) এর সাক্ষাৎ হয়। তিনি বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর! তোমার এই পদচারণা আল্লাহর পথেই। আমি আবু আবস (রা.) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির পদদ্বয় আল্লাহর পথে ধূলিময় হলো, তার পদদ্বয় জাহান্নামের জন্য হারাম করা হলো। (জামে তিরমিযি, হাদিস নং: ১৬৩৮, সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ৯০৭) রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমাতে তিন ধরনের লোক আসে। (ক) যে ব্যক্তি অনর্থক আসে, সে তাই পায় (খ) যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনার জন্য আসে। আল্লাহ চাইলে তাকে দেন, অথবা দেন না (গ) যে ব্যক্তি নীরবে আসে এবং কারো ঘাড় মটকায় না ও কষ্ট দেয় না, তার জন্য এই জুমা তার পরবর্তী জুমা এমনকি তার পরের তিনদিনের (সগীরা) গোনাহগুলোর কাফফারা হয়ে থাকে। এ কারণেই আল্লাহ বলেছেন, যে ব্যক্তি একটি নেকীর কাজ করে, তার জন্য দশগুণ প্রতিদান রয়েছে। (আনআম ৬/১৬০)। আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৩৯৬, অনুচ্ছেদ-৪৪)। ২২ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২০১৫/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে