মঙ্গলবার, ০১ মে, ২০১৮, ০৬:১৪:৩১

ফযিলতপূর্ণ পবিত্র শবে বরাতে করণীয় আমল

ফযিলতপূর্ণ পবিত্র শবে বরাতে করণীয় আমল

ইসলাম ডেস্ক: পবিত্র শবে বরাত ও এর ফযিলতের হাদীস সমূহ থেকে জানা যায় যে, এ রাতের জন্য স্বতন্ত্র কোনো ইবাদত নেই বরং এ রাতে এমন সব নেক আমল করা উচিত যার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতপ্রাপ্তির উপযুক্ত হওয়া যায়৷ পাশাপাশি এমন সব কাজকর্ম থেকে বিরত থাকা উচিত যার কোন প্রমাণ রাসুলের সহিহ সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমল বা বর্ণনায় পাওয়া যায় না। তাই নিম্নে এ রাতে করণীয় আমল ও বর্জনীয় বিষয় সমূহ বিবৃত করা হলো।

 

শবে বরাতে করণীয় আমল :

এক.

মাগরিব, এশা ও ফজরের নামায যেনো অবশ্যই জামাআতের সাথে হয়৷

দুই.

সাধারণভাবে যে নিয়মে নফল নামায পড়া হয় সেভাবেই পড়া অর্থাৎ দুই রাক’আত করে যতো রাক’আত সম্ভব হয় এবং যে সূরা দিয়ে সম্ভব হয় পড়বে৷

তিন.

তাওবা করা৷ তাওবা বলা হয় তিন জিনিসের সমষ্টিকে৷ ক. কৃতপাপের জন্য অনুতপ্ত হওয়া৷ খ. সঙ্গে সঙ্গে এই পাপটি পরিহার করা৷ গ. পাপটি আর করবে না এই মর্মে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা৷

চার.

কুরআনুল কারীম তেলাওয়াত করা, দুরূদ শরীফ পড়া, যিকির-আযকার করা ও ইস্তিগফার করা ইত্যাদি৷

ছয়.

সম্ভব হলে এ রাতে কিছু দান সদকা করে এবং নফল নামাজ পড়ে মৃতদের রূহে সাওয়াব পৌঁছানো৷

সাত.

পরদিন অর্থাৎ ১৫-ই শা’বান নফল রোযা রাখা৷ রোযা রাখার বিষয়টি উল্লেখিত হাদীস ছাড়াও অন্যান্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত৷

আট.

সলাতুত্ তাসবীহ: যদি সলাতুত্ তাসবীহকে এই রাতের বিশেষ ইবাদত মনে না করে আদায় করতে চান, তাহলে করতে পারেন৷ এ ক্ষেত্রে এই নামাযের নিয়মটি কোনো বিজ্ঞ আলেম থেকে জেনে নিবেন৷

শবে-বরাতে বর্জনীয় বিষয়:

শয়তান মানুষকে এই রাতে নেক আমল থেকে বিরত রাখার জন্য কিছু কুসংস্কারের প্রচলন ঘটিয়েছে৷ বিস্ময়ের ব্যপার হলো মানুষ এগুলোকে নেক কাজ মনে করে শুধু বিভ্রান্তই হচ্ছে এবং কবীরা গুণাহে লিপ্ত হচ্ছে৷ এ জাতীয় আপত্তিকর কাজগুলো হলো:

১. আতশবাজী, তারাবাতি, পটকা ইত্যাদি ফুটানো৷

২. মসজিদ, ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট ও অন্যান্য জায়গায় আলোকসজ্জা করা। এসব অপচয়ের শামিল৷ তাছাড়া এটি হিন্দু দেওয়ালী উৎসব হতে গৃহীত৷ তাই এ ধরণের কর্মকান্ড বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার কারণে অবশ্যই পরিত্যাজ্য ও বর্জনীয়৷ কারণ, হাদীস শরীফে এসেছে- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য রাখবে, তার হাশর-নাশর তাদের সাথেই হবে৷”

৩. খিচুড়ী বা হালুয়া-রুটি বানানো৷ এসবকে এ রাতের বিশেষ কাজ মনে করা হয়৷ মা-বোনদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়৷ মসজিদে হৈ চৈ ও গোলমাল বেধে যায়৷ ইবাদত করার পরিবেশ নষ্ট হয় এবং এ সবের পিছনে পড়ে এ রাতের মূল কাজ তাওবা-ইস্তেগফার, নফল ইবাদত ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত হয়৷

এগুলো কুসংস্কার৷ পরিহার করা আবশ্যক৷ এক কথায় এ রাতে আনুষ্ঠানিকতা এবং অপ্রয়োজনীয় কাজ বর্জন করে একাকীভাবে নফল ইবাদতে আত্ম নিয়োগ করা উচিত, যাতে আমরা বরকতপূর্ণ রাতের বরকত লাভে ধন্য হয়ে আল্লাহর সাধারণ ক্ষমাপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি৷

(-ইকতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকীম: ২/৬৩২, আল-মাদখাল লি-ইবনিল হাজ্জ: ১/২৯৯ ও ১/৩০৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৫/২৮৯)

আল্লাহ আমাদের সকলকে সমস্ত কুসংস্কারাচ্ছন্ন বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ি পরিহার করে এ রাতের যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করে একাগ্রতার সাথে তাঁর ইবাদত করার তাওফীক দান করুন৷ আমিন।

এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে