১. মাসআলা : বদলি হজে প্রেরণকারী যদি এই বলে টাকা দেয় যে, ‘আপনি এ টাকা স্বাচ্ছন্দের সঙ্গে খরচ করতে পারবেন, কিছু বেঁচে গেলে তা ফেরত দিতে হবে না’ তাহলে হজ আদায়ের পর হজের প্রয়োজনে কেনা কাপড়-চোপড়, সামানপত্র ও উদ্বৃত্ত টাকা-পয়সা প্রেরণকারীকে ফেরত দিতে হবে না। এসব বস্ত্ত সে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে।
তবে যদি প্রেরণকারী টাকা দেওয়ার সময় এ রকম কিছু না বলে এবং তার কথাবার্তা বা অবস্থা দেখে বোঝা যায়, উদ্বৃত্ত টাকা-পয়সা ও হজের প্রয়োজনে কেনা বস্ত্তসামগ্রী প্রেরণকারীকে ফেরত দিতে হবে তাহলে প্রেরিত ব্যক্তির উদ্বৃত্ত টাকা ও অন্যান্য সামানপত্র রেখে দেওয়া জায়েয হবে না। অবশ্যই তা প্রেরণকারীকে ফেরত দিতে হবে। হ্যাঁ, ফেরত দেওয়ার পর তিনি যদি খুশি মনে তা দিয়ে দেন তাহলে সেগুলো গ্রহণ করতে অসুবিধা নেই।
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী রাহ. বলেন, ‘কারো পক্ষ থেকে বদলি হজ করার পর যদি প্রেরিতের নিকট প্রেরকের দেওয়া কিছু অর্থ অবশিষ্ট থাকে তাহলে সে প্রেরণকারীকে বিষয়টি জানাবে। সে দিয়ে দিলে প্রেরিতের গ্রহণ করতে বাধা নেই। অন্যথায় প্রেরণকারীকে তা ফেরত দিতে হবে।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/৫৪১) [শরহু মুখতাছারিত তহাবী ২/৪৯৫; মাবসূত, সারাখসী ২৭/১৭২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৭; মানাসিক ৪৫৯; আলবাহরুল আমীক ৪/২৩৭৮, ২৩৮১]
২. মাসআলা : বদলি হজে প্রেরণকারী যদি বদলি আদায়কারীকে টাকা-পয়সার হিসাব-নিকাশের ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখার জন্য বলে, ‘আমি আপনাকে হজের জন্য প্রদত্ত টাকার মালিক বানিয়ে দিলাম বা আপনাকে হাদিয়া দিলাম তাহলে ঐ টাকায় আদায়কৃত হজ দ্বারা প্রেরকের ফরজ হজ আদায় হবে না। কারণ হাদিয়া করার কারণে বা মালিক বানিয়ে দেওয়ার কারণে সে ঐ টাকার মালিক হয়ে গিয়েছে এবং হজটি তার নিজের টাকায় সম্পন্ন হয়েছে। এ কারণে বদলি হজের জন্য টাকাটা প্রেরকের মালিকানায় রেখেই প্রেরিত ব্যক্তিকে হজের খরচ হিসাবে প্রদান করতে হবে। আর হিসাবের ঝামেলা এড়ানোর জন্য পূর্বোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। অর্থাৎ প্রেরণকারী টাকা দিয়ে একথা বলে দিবে যে, কিছু অবশিষ্ট থাকলে তা আমাকে ফেরত দিতে হবে না বা কোনো হিসাবও আমাকে দিতে হবে না।[যুবদাতুল মানাসিক ৪৫৯]
৩. মাসআলা : বদলি হজের জন্য নিজ দেশ থেকেই কাউকে পাঠাতে হবে। নিজ দেশ থেকে কাউকে পাঠানোর সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অন্য দেশে অবস্থানরত কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো হলে প্রেরণকারীর ফরজ হজ আদায় হবে না। এক্ষেত্রে নিজ দেশ থেকে পুনরায় বদলি হজ করাতে হবে।[মানাসিক ৪৪০; গুনইয়াতুন নাসিক ৩২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৫]
লেখক : মাওলানা মুহাম্মাদ ইমদাদুল্লাহ
৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর