বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫, ০৭:৪৫:৪৬

ঋণ থেকে মুক্তি পেতে মহানবী (সা.) যা করতে বলেছেন

ঋণ থেকে মুক্তি পেতে মহানবী (সা.) যা করতে বলেছেন

ইসলাম ডেস্ক: আমরা জীবনে চলার পথে অনেক সময় প্রয়োজনে অনেক সময় অপ্রয়োজনে নিকট আত্মীয় কিংবা সহকর্মীর কাছ থেকে ধার বা দেনা করে থাকি। আবার অনেকেই আছেন যারা জীবনের প্রয়োজনে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা লোন নিয়ে থাকেন।

লোনের টাকা কিংবা ধারের টাকা প্রকৃত পক্ষে কারও জীবনেই সুখের কোন বার্তা বয়ে নিয়ে আসে না। তাই জীবনে সব সময়ই আমাদের উচিত ঋণ থেমে মুক্ত থাকা। নবী করিম (সা.) উপবাস থাকলেও দুনিয়াবি কারণে ঋণ করেননি। তবে ইসলামের কাজে ধার-কর্জ করেছেন বলে হাদিসে পাওয়া যায়। হজরত আবু রাফে (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি উট ধার নেন।

অতঃপর হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে উটটি এলে আবু রাফেকে আদেশ দেওয়া হয়; যেন সেই ব্যক্তির উট ফেরত দেন। -সহিহ মুসলিম ইসলাম ঋণ গ্রহণকে সীমিত আকারে বৈধতা দিয়েছে। কিন্তু বিলাসিতার জন্য ঋণ করা কিছুতেই ইসলামসম্মত নয়। তবে বিপদে-আপদে বিভিন্ন প্রয়োজনে কারো কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের অনুমতি দিলেও তা পরিশোধের নির্দেশও দিয়েছেন কঠোরভাবে।

সমাজে কিছু লোক আছেন, যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পাওনাদারকে ঠকানোর মনোবৃত্তি নিয়েই ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করেন। যা প্রত্যাশিত আচরণ নয়। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে পরকালে তার নেক আমল দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। না হলে গুনাহের বোঝা মাথায় নিয়ে জাহান্নামে যেতে হবে। ঋণ নিয়ে উচ্চাভিলাষ চরিতার্থকারী ঋণখেলাপির জানাজা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) পড়তেন না।

তবে ঋণ পরিশোধের প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অপারগতাবশত সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারে না, এ ধরনের ঋণখেলাপিকে অবকাশ দিয়েছে ইসলাম। অনিবার্য কারণে ঋণ পরিশোধে অপারগতা দেখা দিলে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া কিছুতেই উচিত নয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই অবহিত করতে হবে ঋণদাতাকে। সেই ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করতে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে পার্থিব প্রচেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করতে হবে।

তিরমিজি শরিফের এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, একবার হজরত আলী (রা.)-এর কাছে এক ব্যক্তি তার ঋণ পরিশোধের জন্য কিছু সাহায্য চাইলেন। এসময় হজরত আলী (রা.) তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে কয়েকটি শব্দ শিক্ষা দেব না, যা আমাকে রাসূলুল্লাহ (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন? যদি তুমি এটা পড় তাহলে আল্লাহই তোমার ঋণমুক্তির ব্যাপারে দায়িত্ব নিবেন। যদি তোমার ঋণ পর্বতসমানও হয়।

এরপর হজরত আলী (রা.) ওই ব্যক্তিকে বললেন পড়- اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكِ عَمَّنْ سِوَاكَ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনী বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনী বিফাজলিকা আম্মান সিওয়াক। অর্থ: হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট কর। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারো মুখাপেক্ষী করো না এবং স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে স্বচ্ছলতা দান কর।

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার কাছে ঋণমুক্তির জন্য সাহায্য কামনা করলে, আশা করা যায় আল্লাহতায়ালা ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে সব ধরনের ঋণ থেকে মুক্ত করবেন।

এমটিনিউজ/ রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে