এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, যারা সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় একমাত্র আল্লাহর ওপর আস্থা রাখে, অবিচল বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই আল্লাহর প্রিয় বান্দা। এর দ্বারা আরও প্রমাণিত হয়, আমাদের সমাজে প্রচলিত জাদুবিদ্যা, মন্ত্রতন্ত্র, ঝাড়ফুঁক, কবিরাজি ইসলাম সমর্থন করে না। কারণ এতে নাজায়েজ অনেক কাজও হয়। আল্লাহর ওপর কোনো আস্থা থাকে না। থাকে কবিরাজের কারিশমা ও জাদুমন্ত্রের ওপর। তবে চিকিৎসা করা সুন্নত। কারণ, নবী করিম (সা.) নিজেও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা করেছিলেন।
আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে জায়েজ উপায়ে যদি চিকিৎসা করা হয় তাতে কোনো সমস্যা নেই। পবিত্র কোরআন শরিফের কিছু আয়াত আছে যেগুলো পড়ে ফুঁ দিলে মানুষের উপকার হয়। হাদিস শরিফেও কিছু দোয়া বর্ণিত আছে যা চিকিৎসা সেবায় উপকারী। আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস ও অবিচল আস্থাশীল বান্দাদের বিনা হিসাবে জান্নাতে যাওয়ার ব্যাপারে অন্য বর্ণনায় হাদিসটি দীর্ঘভাবে বর্ণিত হয়েছে। একবার রসুল (সা.) বাইরে এসে সাহাবিদের বললেন, পূর্ববর্তী নবীদের উম্মতদের আমার সামনে উপস্থিত করা হলো। আমি দেখলাম, একজন নবী চলে যাচ্ছেন আর তার সঙ্গে রয়েছেন মাত্র একজন ব্যক্তি। আরেকজন নবী চলে যাচ্ছেন তার সঙ্গে রয়েছেন শুধু দুজন লোক। আরেকজন নবীর সঙ্গে দেখলাম মাত্র একদল লোক। একজন নবীকে এমনও দেখলাম, তার সঙ্গে একজন লোকও নেই। এরপর আমি দেখলাম, একটি বিরাট জনতার দল। যা চতুর্দিকে ছড়িয়ে রয়েছে। তখন আমি মনে মনে এরূপ আকাঙ্ক্ষা করলাম, আহা! এ জামাতটি যদি আমার উম্মতের হতো! তখন বলা হলো, এরা হজরত মুসা (আ.)-এর কওম। তারপর আমাকে বলা হলো, আপনি ভালো করে তাকিয়ে দেখুন। তখন বিশাল সমাবেশ দেখলাম। বলা হলো, আপনি সব দিকে তাকান। আমি সবদিকে তাকিয়ে বিরাট জামাত দেখতে পেলাম। তখন আমাকে বলা হয়, এরা সবাই আপনার উম্মত। তাদের সম্মুখভাগে রয়েছে সত্তর হাজার লোক। যারা হিসাব-নিকাশ ছাড়াই বেহেশতে প্রবেশ করবে। তারা ওই সব লোক যারা অশুভ ও অমঙ্গল চিহ্ন বা কুলক্ষণ ইত্যাদি মানে না ও বিশ্বাস করে না, ঝাড়ফুঁক ও মন্ত্রতন্ত্রে আস্থা রাখে না, আগুনে উত্তপ্ত লোহার দাগ লাগায় না। তারা তাদের প্রতিপালকের ওপর নির্ভর করে।
মহান আল্লাহ আমাদের তাঁর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা রাখার তৌফিক দান করুন। আমিন।
মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন
লেখক: খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।
৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর