আমিন মুনশি : মানবদেহ থেকে রুহ বেরিয়ে যাওয়ার নাম মৃত্যু। মৃত্যুর পর মানুষের নতুন একটি জীবন শুরু হয়, যার নাম ‘বারযাখী’ জীবন। এই জীবন দুনিয়া ও কেয়ামতের মধ্যবর্তী সময়। এ সময় কতটা দীর্ঘ হবে এ সম্বন্ধে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে নির্দিষ্ট কোনো সময়কালের উল্লেখ পাওয়া যায় না। তবে যখন বিচারের দিন বা কেয়ামত এসে উপস্থিত হবে তখন সকল রুহকে উপস্থিত করা হবে। প্রত্যেক মানুষের শরীরের সঙ্গে রুহ বা আত্মাকে সংযুক্ত করে কেয়ামতের ময়দানে উপস্থিত করা হবে।
এ সম্পর্কে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সুরা কাহফের ৯৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন- ‘আমি সেদিন তাদের দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব এবং তখন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে আনব।’
এছাড়া মহান আল্লাহ সুরা ইয়াসিনের ৫১ নম্বর আয়াতে বলেন- ‘যখন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন মানুষ কবর থেকে তাদের পালনকর্তার দিকে ছুটে আসবে।’ পবিত্র কুরআনের এ দুই আয়াত থেকে এটা স্পষ্ট যে, যখনই শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে তখনই কিয়ামতের কঠিন দিন শুরু হয়ে যাবে। আর এসব আয়াতে গভীরভাবে মনোনিবেশ করলে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, কিয়ামতের দিন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত মানুষকে ‘বারযাখে’র জীবন কাটাতে হবে।
অবশ্য দুনিয়ার জীবনের মৃত্যুর পর মাটির তৈরি মানবশরীর মাটিতে মিশে যাবে। কিন্তু, তার রুহ বা আত্মাই শুধু ‘বারযাখে’র জীবনযাপন করবে। রুহ বা আত্মার কোনো মরণ নেই। এ কারণেই মানুষ মারা গেলে আমরা বলি ইন্তেকাল (স্থানান্তর হওয়া) করেছেন। অর্থাৎ একজন মানুষ দুনিয়ার জীবন থেকে ‘বারযাখে’র জীবনে স্থানান্তর হয়েছেন মাত্র।