আমিন মুনশি: জীবনের উত্থান-পতন, দুঃখ, বেদনা, নিয়ে হতাশ হয়ে কোন লাভ নেই। কারণ জীবন থেকে দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-মুসিবতকে আলাদা করা যায়না। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা- পৃথিবীতে আর তোমাদের জীবনে যে বিপদ আসে তা আমি ঘটানোর পূর্বেই লিখে রেখেছি। (৫৭-সূরা আল হাদীদ: আয়াত-২২)
সুতরাং জীবনের অর্থই হলো-সংগ্রাম, পরিশ্রম, কাজ আর দায়িত্বের এক মহা-সমাহার। তার মধ্যে সুখ হলো একটি ব্যতিক্রম বা একটি ক্ষণস্থায়ী পর্ব, যা বিক্ষিপ্তভাবে আসে আর যায়। কিন্তু এসবের মাঝেও মানুষ জীবনকে দারুণভাবে উপভোগ করতে চায়, অথচ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য দুনিয়াকে স্থায়ী আবাস হওয়া পছন্দ করেন না। কারণ, তিনি বান্দার জন্য অনন্ত জীবনের উপভোগ্য নেয়ামত জান্নাত তৈরী করে রেখেছেন। দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ নির্ধারিত পথে সফলতা অর্জন করে কেবল সে জান্নাত লাভ করা যাবে। অন্য কোন কিছুর বিনিময়ে নয়। এ পৃথিবী যদি পরীক্ষার স্থান না হতো, তবে এটা বিপদ-মসিবত, রোগ-বালাই ও দুঃখ-কষ্ট মুক্ত হতো।
আল্লাহ পাক বলেন, ধৈর্যশীল ছাড়া এ গুণ আর কারো ভাগ্যে জোটে না। এবং অতি ভাগ্যবান ছাড়া এ মর্যাদা আর কেউ লাভ করতে পারে না। (৪১:৩৫) আর তাই নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, দুনিয়া মুমিনের জেলখানা ও কাফেরের জান্নাত। তিনি আরো বলেন-আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে তিনি নানান সংকট দ্বারা জর্জরিত করেন।
যুগে যুগে ঈমানের পরীক্ষায় মুত্তাকী, ও সিদ্দীকদের উপর জুলুম-নির্যাতন আর কারাবন্দী হওয়ার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। চার খলিফা, চার ইমাম কেউ রেহাই পাননি। কিন্তু প্রতিটি অধ্যায়ে তারা ছিলেন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুলকারী এবং তাঁরই সাহায্যের মুখাপেক্ষী।
আজকের দিনে সত্যের পথের পথিকদেরও একই পথ অনুসরন করেই সামনে বাড়তে হবে। আল্লাহ বলেন, যারা ঘোষণা করেছে- ‘আল্লাহ আমাদের রব, অতপর তার ওপরে দৃঢ় ও স্থির থেকেছে নিশ্চিত তাদের কাছে ফেরেশতারা আসে এবং তাদের বলে, ভীত হয়ো না, দুঃখ করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ শুনে খুশি হও তোমাদেরকে যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। (৪১:৩০)
আজ অনেক মুসলমানের নিকট আল্লাহ তায়ালার উপর তাওয়াক্কুল আর সাহায্য পাওয়ার শিক্ষা অনুপস্থিত। তাই আমরা কখনও অমুক, কখনও তমুকের সাহায্য-সহযোগিতার প্রত্যাশি হয়ে পড়ি। মনে রাখতে হবে, এই দুর্বলতাগুলোই আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত করছে আমাদের।