ইসলাম ডেস্ক: দেখা যায়, অনেকেই কোরআন ছুঁয়ে, মাথা ছুঁয়ে, মাজার বা পীরের নামে শপথ করে। কিন্তু জানেন কি ইসলাম কি বলে? ইসলামী বিধান মতে, তা শিরক ও সবচেয়ে বড় গুনাহ। হাদিস শরিফে আছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করে, সে অবশ্যই কুফরি বা শিরক করল।’ (তিরমিজি শরিফ, হাদিস : ১৫৩৫)
শপথ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নামে করতে হয়। কিন্তু কোরআন স্পর্শ করে যদি কেউ শপথ করে, তাহলে সে শপথও রক্ষা করতে হবে। কেননা কোরআন আল্লাহর কালাম। এটি রাব্বুল আলামিনের কথা। তাই এটিও এক ধরনের কসম। এই ধরনের কসম করলে অবশ্যই তা পূরণ করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কালাম হওয়ার কারণে কোরআনের মর্যাদা কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন করার সুযোগ নেই। আল্লাহর নামে কসম করলে যেমন তার মর্যাদা রক্ষা করা জরুরি, তেমনি কোরআন ছুঁয়ে শপথ করলে এর মর্যাদা কোনোভাবে ক্ষুণ্ন করা যাবে না।
কোনো ব্যক্তি আল্লাহর নামে করা শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারাস্বরূপ তিনটি কাজের মধ্যে যেকোনো একটি কাজ করতে হবে।
এক. ১০ জন দরিদ্রকে মধ্যম শ্রেণির খাদ্য সকাল-বিকাল দুই বেলা খাওয়াতে হবে। এটি অর্থমূল্যে দিতে চাইলে প্রত্যেককে পৌনে দুই সের গম বা তার অর্থমূল্য দিতে হবে।
দুই. ১০ জন দরিদ্রকে ন্যূনতম ‘সতর ঢাকা’ পরিমাণ পোশাক-পরিচ্ছদ দান করতে হবে।
তিন. ক্রীতদাস থাকলে একজন ক্রীতদাস মুক্ত করে দিতে হবে। কেউ যদি এ আর্থিক কাফফারা দিতে সমর্থ্য না হয়, তার জন্য কাফফারা হলো তিনটি রোজা রাখা। হানাফি মাজহাব মতে, ওই রোজা উপর্যুপরি ও ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে।
কেউ যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করে, তাহলে তার কাফফারা হলো কালেমা ত্বাইয়েবা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ করা। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি শপথ করতে গিয়ে লাত ও উজজার (আরবের মূর্তির) নামে শপথ করে বসে, সে যেন বলে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত, হাদিস : ৩৪০৯)
স্মরণ রাখতে হবে, অহেতুক শপথ করা ইসলাম সমর্থন করে না। আবার শপথ ভঙ্গ করাও ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।