ইসলাম ডেস্ক: মুসলিম সম্প্রদায় পারস্পরিক দেখা-সাক্ষাতে কুশল বিনিময়ে সচারাচর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ শব্দটি বলে থাকে। ‘আলহামদুলিল্লাহ’ শব্দের অর্থ হলো ‘সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য’। মুসলমানদের বিশ্বাস সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য নির্ধারিত।
মুসলমানরা হাঁচির পর কেন আলহামদুলিল্লাহ বলে? এর কারণইবা কী? প্রিয়নবি হাদিসে হাঁচির পর আলহামদুলিল্লাহ বলাকে সুন্নাত বলেছেন কেন? চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় ওঠে এসেছে হাঁচি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলার কারণ।
মানুষ যখন হাঁচি দেয় তখন মানুষের দেহ থেকে অনেক ক্ষতিকর জীবাণূ বেরিয়ে যায়। যে কারণে মানুষ হাঁচির পর ক্ষতি থেকে বাঁচার কারণে আল্লাহর প্রশংসা বাক্য ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে শুকরিয়া আদায় করে।
হাদিসে পাকে এসেছে, কোনো মুসলমান যখন হাঁচির পর ‘আলহামদুলিল্লাহ বলে আর অন্য মুসলমান তা শুনে তবে তবে তার উচিত ‘ইয়ারহামুকুমুল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহর আপনার প্রতি রহমত বর্ষণ করুন।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে হাঁচির যেসব উপকারিতা ওঠে এসেছে-
> যদি কোনো মানুষ একবর হাঁচি দেয়, তার সঙ্গে মানুষের শরীর থেকে হাঁচির সঙ্গে এক সঙ্গে এক লক্ষ জীবাণূ বেরিয়ে যায়।
> মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রোগ ও সংক্রামক ব্যাধি হাঁচির সঙ্গে বাষ্পাকারে বেরিয়ে যায়। যাতে মানুষ এ ব্যাধিগুলো থেকে মুক্তি পায় এবং মাথায় আরামবোধ করে থাকে। যা মাথা ব্যাথা থেকেও মুক্তি দেয়।
> মানুষের শরীরের অনেক ক্ষতিকর উপাদান শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে নাকে এসে জমা হয়। যার মাধ্যমে মানুষে হার্ট তথা ফুসফুস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চোখের একটি পলকেই হাঁচির সঙ্গে মানুষের নাকে জমে থাকা জীবাণূগুলো বেরিয়ে যায়।
> যাদের নাক ও মাথা জ্যাম থাকে একটি হাঁচিই তাদেরকে শারীরিকভাবে পরিপূর্ণ প্রশান্তি এনে দেয়।
> হাঁচি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন বায়ু প্রবাহে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যার ফলে পরিচ্ছন্ন বায়ুতে ফুসফুস সতেজ হয়ে ওঠে।
> সাধারণত মানুষ যখন হাঁচি দেয় তখন স্বাভাবিকভাবেই তাদের চোখ বন্ধ হয়ে যায়। এটি রক্ত চলাচল সহজ করে, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থেকে থেকে মানুষের চোখ ও শরীরিকে সংরক্ষণ করে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বুঝা যায় যে, ছোট্ট একটি হাঁচির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মানুষকে কী পরিমাণ ক্ষতি থেকে হেফাজত করেন। যার কারণে প্রিয়নবি শেখানো ভাষায় মানুষ আল্লাহর প্রশংসা করে থাকে।
মনে রাখতে হবে
হাঁচি মানুষের জন্য মহান প্রভুর পক্ষ থেকে একটি আর্শীবাদ। কারণ এটি মানুষের শরীরে (ভূমিকম্পের ন্যায়) এমন একটি কম্পন সৃষ্টি করে যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আর এতে মানুষের শরীরের যাবতীয় জমাট জীবাণূ কম্পনের ফলে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। স্বাভাবিক ভাবে যেসব স্থানে রক্ত চলাচল বন্ধ থাকে হাঁচির ফলে সেসব স্থানে রক্ত প্রবাহ তৈরি হয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে, হাঁচির মাধ্যমে যেহেতু মানুষ মারাত্মক ক্ষতি থেকে মুক্তি লাভ করে এ কারণেই হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাঁচির পর শুকরিয়া স্বরূপ ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে শিখিয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাঁচির পর আলহামদুলিল্লাহ বলার এবং যারা তা শুনে তাদেরকে ইয়ারহামুকুমুল্লাহ বলার তাওফিক দান করুন। হাঁচির মাধ্যমে শারীরিক যাবতীয় ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।-জাগো নিউজ